বরগুনায় ব্যক্তিগত আক্রোশের জেরে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে গিয়ে সাজানো ধর্ষণ মামলায় নিজেই ধর্ষক হয়ে কারাগারে গেছেন ছগির (৩৮) নামের এক আইনজীবীর সহকারী।
শুক্রবার (২৬ মার্চ) সকালে ছগিরকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ আদালতে হাজির করলে এদিনই বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
বরগুনা সদর থানা সূত্রে জানা গেছে, বরগুনার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের এক নারী বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) বরগুনা সদর হাসপাতালের জাহিদ নামের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ বরগুনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এরপর বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে এসআই কেয়াসহ পুলিশের একটি টিম ওই নারীকে নিয়ে ভুক্তভোগীর (কথিত ধর্ষক) কর্মস্থলে গিয়ে ধর্ষককে চিহ্নিত করতে বললে ওই নারী শনাক্ত করতে ব্যর্থ হন। এ ঘটনায় পুলিশের সন্দেহ হলে ওই নারীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে ওই নারী বলেন, মামলা সূত্রে ছগির নামের এক মুহুরির সাথে তার পরিচয় হয়। ছগির নিজেই তাকে ধর্ষণ করে ২০ হাজার টাকার চুক্তিতে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে বলে। এরপর বরগুনার সরকারি হাসপাতালের জাহিদ নামের এক কর্মচারীকে ফাঁসাতে ধর্ষণ মামলার অভিযোগ করতে থানায় পাঠায় ছগির। সে কখনো জাহিদকে চিনেন না বা কখনো দেখেননি বলেও স্বীকার করেন।
এবিষয়ে বরগুনা সদর হাসপাতালে কর্মরত জাহিদ বলেন, আমার সাথে তাদের কোন পারিবারিক শত্রুতা নেই। তবে তার শ্যালিকার সাথে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জহিরুল ইসলাম বাবুর সাথে সম্প্রতি ডিভোর্স হয়ে গেলে তারা বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে।
তিনি দাবী করেন, জহিরুল ইসলাম বাবুর ইন্ধনেই ছগির তাকে ফাঁসাতে এই মামলা দিতে চেয়েছিল। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে ন্যায় বিচারের দাবী জানিয়েছেন।
বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন, পুলিশি তদন্তে মিথ্যা ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর ওই নারী তার ভুল বুঝতে পেরে সত্যতা স্বীকার করেছে। নারীর দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে আমরা প্রাথমিকভাবে ছগিরের বিরুদ্ধে ধর্ষণের প্রমাণ পাওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে অন্য কেউ জড়িত আছে কি না সেটা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে বরগুনা সদর থানার ওসি কে এম তারিকুল ইসলাম বলেন, মিথ্যের আশ্রয় নিয়ে কাউকে ফাঁসানোর কোনও সুযোগ নেই। বরগুনা সদর থানার পুলিশ সকল অভিযোগ শতভাগ গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করে। পুলিশ ওই নারীর মুখের বয়ান অনুযায়ী আইনজীবী সহকারীকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠিয়েছে। সেই সাথে ওই নারীকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য বরগুনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।