রাজধানীসহ সারা দেশে কনকনে ঠাণ্ডা। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় ঢাকার তাপমাত্রা আরো ১ থেকে ২ ডিগ্রি কমবে। ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাবে দেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল।
ডিসেম্বরের মাঝামাঝি এসে পুরো উত্তরাঞ্চলজুড়েই এখন শীতের দাপট। গত কয়েকদিন এমনই আবহাওয়া বিরাজ করছে কুড়িগ্রামে। দেশের সবচেয়ে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে শীতের তীব্রতা বাড়িয়েছে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কাহিল হয়ে পড়েছে দেশের উত্তরাঞ্চল। ধীরে ধীরে কমছে তাপমাত্রা। সাথে কনকনে হিমেল হাওয়া। ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়ছে চারপাশ।
গত দুদিন ধরে রংপুর অঞ্চলে শীতের প্রকোপ বেড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে নিম্ন আয়ের মানুষ। তিস্তার চরাঞ্চলের অভাবি মানুষের শীত নিবারণে অগ্নিকুণ্ডই একমাত্র ভরসা হয়ে আছে। শীত জেঁকে বসায় রংপুরের পাঁচ জেলায় দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাসকারী মানুষের অধিকাংশই ভাসমান-যাদের কোনো শীতবস্ত্র নেই।
সরকারি এক পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে,
প্রায় এক যুগ আগে উত্তর জনপদের বিভিন্ন এলাকায় ভূমিহীন ও অতিদরিদ্র
পরিবারের যে জরিপ চালানো হয় তাতে দেখা গেছে, খুব শীতের সময় পাঁচ সদস্য
বিশিষ্ট একটি পরিবারের দিনে গড় আয় ২৫ টাকা। এ কারণে দারিদ্র্যসীমার নিচে
বসবাসকারী এসব পরিবারের লোকজনের পক্ষে কোনোভাবেই নিত্যদিনের খাবার যোগানোর
পর শীতবস্ত্র কেনার সামর্থ্য থাকে না। পরিণতিতে তারা শীত নিবারনের জন্য চট,
ছালা, খড়ের লেপ ব্যবহারসহ সারারাত ধরে অগ্নিকুণ্ড ব্যবহার করছে।
বৃহস্পতিবার
(১৯ ডিসেম্বর) সকালে রংপুরের কাউনিয়ার তিস্তাকূলবর্তী বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে
দেখা যায়, শীতে অভাবী মানুষের জীবন বাঁচানো দায় হয়ে পড়েছে। গরম কাপড় না
থাকায় চরাঞ্চলের বেশিরভাগ মানুষ খড়-কুটো সংগ্রহ করছে। শীত নিবারণে রাতে
তারা আগুন জ্বালিয়ে চেষ্টা করছে শরীরের উষ্ণতা ফিরিয়ে আনার।
দিনাজপুর গত এক সপ্তাহের মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ থেকে ১৪ ডিগ্রী রেকর্ড করা হয়েছে। তখন তাপমাত্র ৬ থেকে ৮ ডিগ্রিতে নেমে আসতে পারে। ঠাণ্ডার তীব্রতা বেড়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা মৌলভীবাজারেও।
আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রাজধানীতে সূর্যের দেখা মিলছে না বললেই চলে। এমন অবস্থা চলবে আরো দুই দিন। স্থান ভেদে ২১ ও ২২ ডিসেম্বরের দিকে ঠাণ্ডার অনুভূতি কমে আসবে। এরপর আসতে পারে নিম্নচাপ। এ ছাড়া ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ দেখা দিতে পারে মাঝারি (৬ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) ধরনের শৈত্যপ্রবাহ।