Monday , December 23 2024
Breaking News

মানুষ ব্যাংকের ওপর আস্থা কমায় টাকা না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে

গত জুলাই থেকে ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসা জাতীয় সঞ্চয়পত্রের বিক্রি অব্যাহত আছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরেও মানুষ সঞ্চয়পত্র ভাঙার চেয়ে কিনেছে বেশি। আর এর আগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বেশির ভাগ সময়েই নেতিবাচক ধারায় ছিল সঞ্চয়পত্র বিক্রি। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি ২০২৪-২৫ সালের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি ইতিবাচক ধারায় রয়েছে। এ মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও চার হাজার ১০৯ কোটি টাকা ইতিবাচক রয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) আগের আসল-সুদ পরিশোধ করেও আট হাজার ৩৩২ কোটি টাকা ইতিবাচক রয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের তৃতীয় মাস সেপ্টেম্বরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির ধারা ছিল নেতিবাচক। ওই সময়ে বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল ১৪৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। আর একই অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছিল এক হাজার ২৬৪ কোটি টাকা।

তথ্য বলছে, আগের মাস আগস্টেও সঞ্চয়পত্র বিক্রি ইতিবাচক ধারায় ছিল। ওই মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও দুই হাজার ৩৬ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল।

এমনকি চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়েও সঞয়পত্র বিক্রি ছিল ইতিবাচক ধারায়। ওই মাসে আগের সুদ-আসল পরিশোধ করেও দুই হাজার ১৮৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ইতিবাচক ছিল। আর গত অর্থবছরের শেষ মাস জুনে সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি (ঋণাত্মক) তিন হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। অর্থাৎ বিক্রির চেয়ে আগের সুদ-আসল বাবদ বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে তিন হাজার ৩৮১ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, মানুষ এখন ব্যাংকের চেয়ে সঞ্চয়পত্রকে বেশি নিরাপদ মনে করছে।কিছু ব্যাংক গ্রাহকের আমানতের টাকা ফেরত দিতে না পারায় ব্যাংকের ওপর মানুষের আস্থা কমে আসছে। এ জন্য মানুষ টাকা ব্যাংকে না রেখে সঞ্চয়পত্র কিনছে।

আর গত অর্থবছরের ১২ মাসে (জুলাই-জুন) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি ঋণাত্মক ধারায় হয়েছে। অর্থাৎ ২০২৩-২৪ অর্থবছরের ১২ মাসে আগের আসল ও সুদ বাবদ ২১ হাজার ১২৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বিক্রির চেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে। গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র বিক্রির ধারা ইতিবাচক ছিল। এরপর সেপ্টেম্বর থেকেই নেতিবাচক ধারায় চলে যায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি, যেটা চলে অর্থবছরের শেষ মাস জুন পর্যন্ত।

প্রতিবেদন বলছে, গত অর্থবছরের প্রথম দুই মাস (জুলাই-আগস্ট) সঞ্চয়পত্র নিট বিক্রি পাঁচ হাজার ৫৬২ কোটি টাকা ইতিবাচক ছিল। তবে এর পর থেকে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হতে থাকে।

আর সঞ্চয়পত্র বিক্রির পরিমাণ যে কমবে, তা সরকার আগেই ধারণা করেছিল। সে জন্য গত ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে সরকারের নিট ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয় ১৮ হাজার কোটি টাকা। আগের ২০২২-২৩ অর্থবছরে এই লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৫ হাজার কোটি টাকা। সংশোধিত বাজেটে তা কমিয়ে ৩২ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছিল। ওই অর্থবছরের শেষে নিট বিক্রি ঋণাত্মক হয়ে দাঁড়ায় তিন হাজার ২৯৫ কোটি টাকা। তবে ২০২৪-২৫ অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র থেকে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে সরকার।

SHARE

About bnews24

Check Also

উদ্যোক্তা গ্রুপের সহায়তায় যশোর শীতবস্ত্র বিতরণ

উদ্যোক্তা গ্রুপের অর্থায়নে যশোর বসুন্দিয়ায় ১০০০ মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল বিতরনের সময়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *