ইসরায়েলে হামলায় জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউ কর্মকর্তারা জড়িত বলে অভিযোগ করছে নেতানিয়াহু প্রশাসন। তাদের এ অভিযোগের পর ফিলিস্তিনে ত্রাণ সহায়তা স্থগিত করেছে ইউরোপের দেশ ইতালি। শনিবার (২৭ জানুয়ারি) আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্তিনিও তাজানি বলেন, মিত্রগোষ্ঠীও একই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা ইসরায়েলের নিরাপত্তা সুরক্ষা দিয়ে ফিলিস্তিনি জনগণকে মানবিক সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।r
ইসরায়েলের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে কেবল ইতালি নয়, তাদের মিত্রগোষ্ঠীগুলো একে একে ত্রাণ সহায়তা স্থগিত শুরু করেছে। গাজা উপত্যকায় যেসব সংস্থা ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে এগুলোর প্রধান হলো জাতিসংঘের ত্রাণবিষয়ক সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ।
গত ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলে অতর্কিতভাবে ব্যাপক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি সেনারা। ইসরায়েলের অভিযোগ, এ হামলার সাথে ইউএনআরডব্লিউএ কর্মকর্তারা জড়িত রয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এর আগে কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র এবং অস্ট্রেলিয়াও সহযোগিতা স্থগিত করছে। সবশেষ এ তালিকায় যুক্ত হয়েছে ইতালি।
ইউএনআরডব্লিউএর কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনি এক বিবৃতিতে বলেছেন, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের ভয়াবহ হামলায় ইউএনআরডব্লিউএ-এর বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা জড়িত, তাদের কাছে এমন তথ্য জমা দিয়েছে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, আমাদের সংস্থার মানবিক সহায়তা প্রদানের ক্ষমতা রক্ষায় আমি অবিলম্বে এসব কর্মকর্তার চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। একই সঙ্গে দেরি না করে তদন্ত শুরু করেছি। ইউএনআরডব্লিউএ-এর কোনো কর্মকর্তা এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা হবে।
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের এমন অভিযোগের পর ইউএনআরডব্লিউএকে অর্থ দেওয়া সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ছাড়া ইসরায়েলের এ অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা জানিয়েছে দেশটি। এরপর তালিকায় আরও কয়েকটি দেশ যুক্ত হয়েছে।
১৯৪৮ সালের আরব-ইসরায়েল যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট লাখ লাখ ফিলিস্তিনি শরণার্থীর দেখাশোনায় ইউএনআরডব্লিউএ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। বর্তমানে গাজা, পশ্চিম তীর, জর্ডান, সিরিয়া ও লেবাননে অবস্থান করা লাখ লাখ ফিলিস্তিনির স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ নানা ধরনের সামাজিক সেবামূলক কাজে সহায়তা দেয় সংস্থাটি। বহুদিন ধরেই যুক্তরাষ্ট্র জাতিসংঘের এই সংস্থার প্রধান অর্থ জোগানদাতা।