মিসরের সীমান্তবর্তী শহর রাফায় হামলার ব্যাপারে ইসরায়েলকে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীদের সংগঠন হামাস। দলটির সিনিয়র নেতা ওসামা হামদান এ হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২ মে) নিউইয়র্ক পোস্টের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
হিজবুল্লাহ-সমর্থিত লেবাননের আল মানার টিভিতে তিনি বলেন, শত্রুরা রাফায় স্থল অভিযান চালালে আলোচনা বন্ধ হয়ে যাবে। কেননা প্রতিরোধ আন্দোলন গোলাগুলোর মধ্যে কোনো আলোচনা করে না।
হামাসের এ নেতা বলেন, তাদের প্রতিরোধ সক্ষমতা এখনো উচ্চপর্যায়ে রয়েছে। দারুণ অবস্থায় রয়েছে প্রতিরোধ আন্দোলন। এ ছাড়া ইহুদিবাদীদের এলিট ব্রিগেডগুলো এখন গাজা উপত্যাকায় ধরাশায়ী হয়েছে।
তিনি বলেন, ইসরায়েল তাদের সক্ষমতা নিয়ে বাজি ধরেছে। অন্যদিকে প্রতিরোধ আন্দোলন তাদের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
গত ৭ অক্টোবর দক্ষিণ ইসরায়েলে প্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালিয়ে ১২০০ ইসরায়েলিকে হত্যার পাশাপাশি প্রায় ২৫০ ইসরায়েলি ও বিদেশি নাগরিককে গাজায় বন্দি করে নিয়ে আসে হামাস। একই দিন হামাসকে নির্মূল এবং বন্দিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী এই সংগঠনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে ইসরায়েল। গত নভেম্বরে সাত দিনের যুদ্ধবিরতি চুক্তির বিনিময়ে ১১০ ইসরায়েলি বন্দিকে হামাস মুক্তি দিলেও এখনো তাদের হাতে শতাধিক বন্দি আছেন।
অন্যদিকে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহতের সংখ্যা ৩৪ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের অধিকাংশ নারী ও শিশু। এ ছাড়া এ পর্যন্ত ৭৭ হাজারের বেশি মানুষ আহত হয়েছে।
বর্তমানে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করতে হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে আলোচনা চলছে। এতে মধ্যস্থতা করছে কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্র। রমজানের আগে এই চুক্তি আলোচনায় অগ্রগতি হলেও এখন দুপক্ষের মতবিরোধের কারণে তা স্থবির হয়ে পড়ে আছে।
কাতার ও মিসরের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বার যুদ্ধবিরতির জন্য হামাস ও ইসরায়েলের যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। তবে হামাস প্রতিবারই স্থায়ী যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে আসছে। এ ছাড়া তারা গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনাদের সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি করছে। হামাসের এমন কঠোর প্রস্তাবের কারণে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে কোনো সাড়া দেয়নি ইসরায়েল।
দুপক্ষের মতানৈক্যের অবসান ঘটাতে গত বৃহস্পতিবার ইসরায়েল সফরে যায় মিসরের একটি সরকারি প্রতিনিধি দল। এছাড়া একই দিনে হামাসের কাছে থাকা জিম্মিদের মুক্তির জন্য গোষ্ঠীটির প্রতি আহ্বান জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যসহ ১৭টি দেশ চিঠি দেয়।
বৃহস্পতিবার চিঠির প্রতিক্রিয়ায় হামাস নেতারা বলেন, তারা আন্তর্জাতিক চাপের কাছে মাথানত করবেন না। এর কয়েক ঘণ্টা পর তারা আবারও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের জনগণের আকাঙ্ক্ষা ও অধিকারের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ যে কোনো প্রস্তাবকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হামাস।’