স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা মামলার তদন্ত বাধাগ্রস্ত করতে কোনো তদবির বা চাপ নেই। সঠিক পথেই তদন্ত আগাচ্ছে। বুধবার (১২ জুন) দুপুরে সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, আনারের মেয়ে বাবা হত্যার বিচার চাইবে এটাই স্বাভাবিক। তদন্তে কেউ যাতে পার পেয়ে না যায় তিনি সেই অনুরোধ করেছেন। এই হত্যার তদন্তে কোনো তদবির বা চাপ নেই। কে চাপ দেবে? তদন্তে যা বেরিয়ে আসবে সেভাবেই বিচার প্রক্রিয়া আগাবে।
তিনি বলেন, সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ ভুল করলে তা তদন্তে চলে আসবে। তিনি আইজিপি থাকার সময় মন্ত্রণালয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। সুতরাং দায় নেওয়ার প্রশ্নই আসে না।
এর আগে, দুপুরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন। এ সময় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অনেক বড় জায়গা থেকে তদবির হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।
ডরিন বলেন, অনেক বড় জায়গা থেকে তদবির হচ্ছে। তদবিরের চাপে যাতে বিচার প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত না হয়। মূল পরিকল্পনাকারীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে। যারা হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সঠিক বিচার চাই। সঠিক বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়ে তিনি বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমাকে আশ্বস্ত করেছেন- আইন, বিচার সব নিজস্ব গতিতেই চলবে। অপরাধীরা পার পাবে না।
ডরিন বলেন, যাকে আটক করা হয়েছে, সে আমাদের প্রতিপক্ষ না। সে বাবার শত্রু না। কে তাকে ধরাচ্ছে? তিনটি ফোন একদিনে হারিয়ে যাচ্ছে, টাকার লেনদেন হচ্ছে- এই বিষয়গুলো সন্দেহজনক। কে এই টাকার জোগানদাতা?
এদিকে, এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যার বিষয়ে নতুন নতুন তথ্য উঠে আসছে। তদন্তের শুরুর দিকে চোরাচালানের কারণে হত্যাকাণ্ড হতে পারে এমন বিষয় সামনে আসে। তবে এখন সেটি মোড় নিয়েছে রাজনীতির দিকে। নিহতের পরিবারেরও দাবি, রাজনৈতিক বিরোধে এই হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।
জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কামাল গিয়াস বাবুসহ আরও কয়েকজনকে সন্দেহ তাদের। ইতোমধ্যে তাদের আটক করা হয়েছে। এ ছাড়া স্থানীয় আরও কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন। তথ্য-প্রমাণে সাপেক্ষে যেকোনো সময় গ্রেপ্তার করা হতে পারে তাদের।
তদন্ত সূত্র জানিয়েছে, এমপি আজীম হত্যার পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল মিন্টুর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল। কয়েক দিন ধরেই তাকে নজরদারিতে রাখা হয়। কারণ, যারা খুনি ছিল তাদের ফোন থেকে এসএমএস ও ছবি গেছে তার ফোনে। এমন যাদের মোবাইল ফোনে ছবি ও মেসেজ গেছে তারাও গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছে।