Monday , December 23 2024
Breaking News

এ কে এম সহিদের নিয়োগ স্থগিত ঢাকা ওয়াসার এমডি পদে

ঢাকা পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ (ওয়াসা)র ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে প্রতিষ্ঠানটির উপব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম সহিদের নিয়োগ স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠতম উপব্যবস্থাপনা পরিচালককে অবিলম্বে ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ কে এম সহিদের নিয়োগ চ্যালেঞ্জ করা রিট আবেদনে প্রাথমিক শুনানির পর বিচারপতি আশিষ রঞ্জন দাস ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ গত ৫ সেপ্টেম্বর রুলসহ এই আদেশ দেন। আদালতের আদেশটি নিশ্চিত করেছেন রিট আবেদনকারীর আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব।

তিনি কালের কণ্ঠকে বলেন, “ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী এ কে এম সহিদের নিয়োগ কেন বেআইনি ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।

২০০৯ সালে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে প্রথমবারের মতো নিয়োগ পেয়েছিলেন তাকসিম এ খান। এরপর দফায় দফায় তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত বছরের ১৪ অক্টোবর সপ্তমবারের মতো ওই পদে আরো তিন বছরের জন্য নিয়োগ পান তিনি।

দুর্নীতি, অনিয়মসহ নানা অভিযোগ থাকার পরও তাকসিমকে একই পদে দীর্ঘ সময় রাখা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ২০০৯ সালের পর থেকে ঢাকা ওয়াসার পানির দাম বাড়ে ১৬ বার।

গত ১৫ বছরে ঢাকা ওয়াসায় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন তাকসিম এ খান। ওয়াসার আইন অনুযায়ী, ঢাকা ওয়াসা পরিচালিত হওয়ার কথা বোর্ডের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী।কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই বোর্ডকে পাশ কাটিয়ে ঢাকা ওয়াসাকে পরিচালনা করেছেন বিতর্কিত এই ব্যক্তি। এ নিয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দ্বন্দ্বের ঘটনাও ঘটে। এতে তাকসিমের কিছুই হয়নি। বরং তাঁর অনিয়ম, অপচয় ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দেওয়ায় সরে যেতে হয় সংস্থাটির সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফাকে। ঢাকা ওয়াসার এমডি হিসেবে তাকসিমের মাসিক বেতন ছিল ৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা।

সর্বশেষ করোনা মহামারির মধ্যে একলাফে ওয়াসার এমডির বেতন বাড়ানো হয়েছিল পৌনে দুই লাখ টাকা।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত ১৪ আগস্ট ওয়াসার এমডি পদ থেকে পদত্যাগ করেন তাকসিম। পরদিন তার চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের অবশিষ্ট মেয়াদ বাতিল করে প্রজ্ঞাপন দেয় স্থানীয় সরকার বিভাগ। ওই প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা ওয়াসা দ্রুদতম সময়ের মধ্যে পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিষ্কাশন কর্তৃপক্ষ আইন, ১৯৯৬ এর বিধান অনুসারে ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগের কার্যক্রম গ্রহণ করবে। নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক নিয়োগ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা ওয়াসায় কর্মরত জ্যেষ্ঠতম উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সকল দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে হিসেবে উপব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) এ কে এম সহিদ উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। এ নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন ঢাকা ওয়াসা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনিসুজ্জামান শাহীন খান। এ রিটে প্রাথমিক শুনানির পর রুলসহ আদেশ দেন উচ্চ আদালত।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম ইফতেখার উদ্দিন মাহমুদ। 

এ কে এম সহিদ উদ্দিন ২০১৬ সালে প্রধান প্রকৌশলী হিসেবে অবসরে যান। পরে প্রতিষ্ঠানটির পরামর্শক হিসেবে কাজ শুরু করেন। এরপর ২০১৮ সালের এপ্রিলে তাঁকে দুই বছরের চুক্তিতে পরিচালক (কারিগরি) হিসেবে নিয়োগ দেন তৎকালীন এমডি তাকসিম এ খান। অথচ ঢাকা ওয়াসার জনবলকাঠামোয় এমন কোনো পদ নেই। তাকসিম খান নিজ ক্ষমতাবলে এ পদ সৃষ্টি করে সহিদ উদ্দিনকে নিয়োগ দেওয়া হয় বলে অভিযোগ ওয়াসার অনেক কর্মকর্তা-কর্মচারীর।

নাম-পদবী প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াসার এক কর্মকর্তা কালের কণ্ঠকে বলেন, “কোনো ধরনের বোর্ড সভা ছাড়াই প্রতিষ্ঠানটির সাবেক চেয়ারম্যান সুজিত কান্তি বালা এমডি পদে সহিদ উদ্দিনকে নিয়োগ দিয়ে গেছেন। বোর্ড সভা ছাড়া এভাবে নিয়োগ বৈধ নয়। তা ছাড়া এ পদে দায়িত্ব পালনের জন্য জ্যেষ্ঠতার যে তালিকা তৈরি করা হয়েছে, সেটিও করেছেন সহিদ উদ্দিন নিজেই। সেখানে তিনি নিজের নাম এক নম্বরে রেখেছেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী জ্যেষ্ঠতার নির্দেশনা মানা হয়নি।’

SHARE

About bnews24

Check Also

উদ্যোক্তা গ্রুপের সহায়তায় যশোর শীতবস্ত্র বিতরণ

উদ্যোক্তা গ্রুপের অর্থায়নে যশোর বসুন্দিয়ায় ১০০০ মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল বিতরনের সময়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *