পাকিস্তানের পূর্বাঞ্চলের জারনওয়ালা শহরে দুই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোরআন অবমাননার অভিযোগে উঠেছে। এ ঘটনার ফলে শহরের গির্জায় আগুন দেওয়ার পাশাপাশি মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা খ্রিস্টানদের বাড়িঘর ভাঙচুর করেছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ কাজ করছে। দেশটির তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার উল হক কাকার এ ঘটনায় দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
পাকিস্তানের শীর্ষ গণমাধ্যমগুলোয় এ প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে প্রকাশিত হয়েছে। এসবে বলা হয়েছে, দুই ব্যক্তির কোরআন অবমাননার দায়ে জারনওয়ালা শহরে হাজার হাজার মুসলমান রাস্তায় নেমে এসেছে। তারা খিস্ট্রানদের বাড়ি ঘরে হামলা চালাচ্ছে। অন্তত চারটি গির্জায় আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গির্জা সংশ্লিষ্ট ১২টি ভবন।
যে দুই খ্রিস্টান ব্যক্তির বিরুদ্ধে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ অবমাননার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। কোরআনের পাতায় অবমাননাকর মন্তব্য করার প্রমাণ মেলায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশই।
অভিযুক্ত একজনের নাম ইয়াসির ভাট্টি, তিনি নিজ বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছেন। বার্তা সংস্থা এএফপি ইয়াসিরের সঙ্গে কথা বলেছে। সংবাদমাধ্যমটি বলছে, খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বী ইয়াসিরের ঘরের আসবাব পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এমনকি মুসলমানরা বাইবেলও পুড়িয়ে দিয়েছে।
উদ্ভূত পরিস্থিতিতে নিন্দা প্রকাশ করেছেন পাঞ্জাব প্রদেশের তথ্যমন্ত্রী আমির মীর। তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাস্থলে হাজারো পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। সহিংসতার ঘটনায় কয়েক ডজন লোককে আটক করা হয়েছে।
তেহরিক-ই-লাব্বাইক পাকিস্তান (টিএলপি) নামে একটি ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের বিরুদ্ধে এ সহিংসতার অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু দলটি এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
হামলা ও সহিংসতার ঘটনায় খ্রিস্টান সম্প্রদায় গভীরভাবে ব্যথিত বলে মন্তব্য করেছেন লাহোরের পাকিস্তানি বিশপ আজাদ মার্শাল। তিনি প্রয়োগকারী এবং বিচার প্রদানকারীদের কাছে ন্যায়বিচার আহ্বান করেছেন। নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিতে অবিলম্বে সরকারের প্রতি অনুরোধও জানিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, জনসংখ্যার ৯৬ শতাংশ মুসলিমের দেশ পাকিস্তানে ধর্ম অবমাননার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড। কোরআন অবমাননার ঘটনা ঘটলেও এখন পর্যন্ত অভিযুক্ত কাউকে দেশটিতে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি। অবশ্য, এ অপরাধে অভিযুক্ত বহু মানুষ এর আগে ক্ষুব্ধ জনতার হাতে নিহত হয়েছে।