Monday , December 23 2024
Breaking News

জাতিসংঘের আদালতে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে গণহত্যা মামলা

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর পরিচালিত দমন-পীড়নের জন্য জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে মিয়ানমার।

সোমবার ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে মামলা করেছে ওআইসিভুক্ত দেশ গাম্বিয়া।

এর মধ্য দিয়ে রোহিঙ্গা নিপীড়নের জন্য সমালোচনার মুখে থাকা মিয়ানমার প্রথম আন্তর্জাতিক কোনো আদালতে বিচারের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে।

৪৬ পৃষ্ঠার অভিযোগে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে রাখাইন রাজ্যে বসবাসরত রোহিঙ্গা মুসলমানদের নির্বিচারে হত্যা, ধর্ষণ এবং তাদের আবাস ধ্বংসের কথা বলেছে গাম্বিয়া।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের বিচারে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতেও (আইসিসি) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। এরমধ্যেই জাতিসংঘের আদালতে মামলা করল আফ্রিকার দেশ গাম্বিয়া।

যদি আইসিজে মামলাটি বিচারের জন্য গ্রহণ করে, তবে এটাই হবে গণহত্যার নিজস্ব তদন্তে আইসিজের প্রথম উদ্যোগ। এর আগে তদন্তের ক্ষেত্রে তারা অন্য সংস্থার উপর নির্ভর করত।

আইসিজের বিধি অনুসারে, জাতিসংঘের সদস্যভুক্ত এক দেশ অন্য দেশের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন ভঙ্গের অভিযোগ তুলতে পারে।

গণহত্যা প্রতিরোধ ও এর শাস্তি বিধানে ১৯৮৪ সালে স্বাক্ষরিত কনভেনশন লঙ্ঘনের অভিযোগ করা হয়েছে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে। ১৯৫৬ সালে ওই ‘জেনোসাইড কনভেনশনে’ সই করে মিয়ানমার।

রোহিঙ্গা গণহত্যার জন্য মিয়ানমারকে বিচারের আওতায় আনতে যে ১০টি সংগঠন গাম্বিয়াকে সহায়তা করছে, তাদের একটি হল হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

গত মার্চে ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অব জাস্টিসে (আইসিজে) মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সর্বসম্মত প্রস্তাব গ্রহণ করেছে ইসলামী সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি)। আবুধাবিতে ওআইসির পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের ৪৬তম বৈঠকের শেষদিনে প্রস্তাবটি অনুমোদন লাভ করে।

গাম্বিয়ার নেতৃত্বে ১০ সদস্যবিশিষ্ট মন্ত্রী পর্যায়ের উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন কমিটি প্রস্তাব পাসের প্রক্রিয়া শুরু করে। ১০ ফেব্রুয়ারি বানজুলে গাম্বিয়ার কো-চেয়ারে কমিটির প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে আন্তর্জাতিক আইন মোতাবেক আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার সুপারিশ করা হয়। বিশেষ করে গণহত্যা সংক্রান্ত কনভেনশন এবং অপরাপর কনভেনশন বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।

২০১৬ সালের অক্টোবরে মিয়ানমারের একটি সীমান্তচৌকিতে জঙ্গি হামলা হলে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনীর নয়জন সদস্য নিহত হন। তারপর মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইন রাজ্যে অভিযান শুরু করে। ওই সময়ে রোহিঙ্গা সংখ্যালঘু মুসলমানদের ওপর নিষ্ঠুর নিপীড়ন চালানো হয়। ওই সময়ে ৭৫ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন।

তারপর ২০১৭ সালের আগস্টে একইভাবে মিয়ানমারের সীমান্তচৌকিতে জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ১১ জন সদস্য নিহত হন। এ ঘটনার জের ধরে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী অভিযান শুরু করে। অভিযানে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্বিচারে হামলা চালায় সেনারা। তাদের হত্যা, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ, নারীদের ধর্ষণসহ নানা ধরনের নিষ্ঠুর নিপীড়ন চালায়।

জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা দলে দলে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে থাকে। ওই সময়ে মানবিক কারণে বাংলাদেশ সীমান্ত খুলে দেয়। সে সময় ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নেন। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে বর্তমানে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১১ লাখের বেশি।

SHARE

About bnews24

Check Also

সাপ্তাহিক ছুটি হতে যাচ্ছে ৩ দিন জাপানে

জাপানে সরকারি চাকরিজীবীদের সাপ্তাহিক ছুটি তিন দিন হতে যাচ্ছে। কর্মীদের জন্য চার দিনের কর্মসপ্তাহ চালু …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *