মার্কিন প্রশাসন বর্তমান পরিস্থিতিতেও ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখে করোনাভাইরাসের বিস্তার ঘটাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি।
শুক্রবার মার্কিন জনগণের প্রতি লেখা এক চিঠিতে ইরানি প্রেসিডেন্ট বলেন, তেহরান ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম মার্কিন অর্থনৈতিক সন্ত্রাসের শিকার। মার্কিন প্রশাসন ইরানের ওপর সর্বোচ্চ চাপের নীতি ত্যাগ করতে প্রস্তুত নয়। এমনকি করোনা সংকটের সময়ও নিষেধাজ্ঞা অব্যাহত রেখে প্রকারান্তরে ভাইরাসের সমর্থন করল মার্কিন প্রশাসন।
তিনি আরও বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ২০১৮ সালের মে মাসে তেহরানের সঙ্গে করা পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসার পর থেকে ইরানের অর্থনৈতিক ব্যবস্থা লক্ষ্য করে একের পর এক শতাধিক নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ চাপিয়েছে, যার ফলে ইরানি জনগণের কোটি কোটি ডলার ক্ষতি হয়েছে এবং করোনাভাইরাস মোকাবেলায় ইরানের ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে।
চিঠিতে রুহানি হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ইরানের চিকিৎসা ব্যবস্থা দুর্বল করা এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইরানের সম্পদের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের লক্ষ্যে যে কোনও স্বল্পদৃষ্টি ও বৈরী নীতি অন্য দেশে মহামারী মোকাবেলা করার ক্ষেত্রে কঠোর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।
রুহানি মার্কিন জনগণকে সম্বোধন করে বলেন, মানবিক দিক বিবেচনা করে আমি মার্কিন জনগণকে তাদের প্রশাসন ও কংগ্রেস প্রতিনিধিদের অবহিত করার আহ্বান জানাই যে চাপ, নিষেধাজ্ঞা এবং শত্রুতা কোনও সময়ে সফল হয়নি।
তিনি আরও করেন, ইরান করোনার বিপক্ষে জিতবে এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ও সর্বোচ্চ চাপের নীতিকে পরাস্ত করবে।
ইরানিরা বর্তমান কঠিন সময় অতিক্রম করবে উল্লেখ করে প্রেসিডেন্ট রুহানি প্রশ্ন করেন, যুক্তরাষ্ট্রের জনগণ কি এটা চায় যে, তাদের নামে, তাদের ভোটে এবং তাদের ট্যাক্সের অর্থে ইরানি জনগণের ওপর এই নিপীড়নমূলক চাপ চলতে থাকুক?
ইরান সংলাপের জন্য প্রস্তুত। ইরান আলোচনাকে ভয় করে না। ইরান কঠোর ভাষার জবাব কঠোর ভাষায় দেয় আর শ্রদ্ধার জবাব শ্রদ্ধা দিয়ে দেয়।
উল্লেখ্য, ইরানে করোনাভাইরাসে সংক্রামিত মানুষের সংখ্যা শুক্রবার পর্যন্ত ১৯৬৪৪ জনে পৌঁছেছে।
ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, গতকালই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৪৯ জন মারা গিয়েছে এবং মোট মৃত্যুর সংখ্যা ১,৪৩৩ টিতে পৌঁছেছে।
আরটি অবলম্বনে- মুহাম্মাদ শোয়াইব