আটলান্টিক মহাসাগরে নিখোঁজ সাবমেরিন টাইটানের অনুসন্ধানে একটি রোবট ও বৈজ্ঞানিক সরঞ্জাম নিয়ে ফ্রান্সের গবেষণা জাহাজ অভিযান চালাচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বড় ধরনের উদ্ধার অভিযানে অংশ নেয় জাহাজটি। এর রোবটটিতে আছে সাগরের নিচে কাজ করার মতো শক্তিশালী আলোর ব্যবস্থা। এটি টাইটানিক জাহাজ যেখানে ডুবে গিয়েছিল, সেই স্থানটিতে গভীর সাগরে অনুসন্ধানে নেমেছে।
মাত্র কয়েক ঘণ্টার অক্সিজেন থাকার আশঙ্কার মধ্যে সাবমেরিন টাইটানের পাঁচ আরোহীর জীবন রক্ষায় গবেষণা জাহাজ আটালান্টা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছাকাছি রয়েছে বলে জানিয়েছে মেরিন ট্রাফিক ওয়েবসাইট। খবর এএফপির।
জাহাজ খোঁজার ওই ওয়েবসাইটটি আরও জানায় উত্তর আটলান্টিকের বুকে লক্ষ্যস্থলের খুব কাছেই রয়েছে রোবটবাহী জাহাজটি।
এই জাহাজটিতে রয়েছে ভিক্টর-৬০০০ নামে দূর নিয়ন্ত্রিত একটি যান, যা ছয় হাজার মিটার পানির নিচে অনুসন্ধান কাজ চালাতে পারে। টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের স্থানটি পানির তিন হাজার ৮০০ মিটার নিচে, যেখানে পৌঁছানোটা বেশ কঠিন।
গত রোববার পর্যটকবাহী সাবমেরিন টাইটান ওই ধ্বংসাবশেষ লক্ষ্য করে সাগরে ডুব দেয়। তবে, তার দুঘণ্টা পরেই সাগরের ওপরে সহায়তাকারী জাহাজের সঙ্গে টাইটানের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
সাবমেরিনে ছিলেন ব্রিটিশ ধনকুবের হামিশ হার্ডিং, পাকিস্তানি ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ ও তার ছেলে সুলেমান, ডুবোজাহাজটি পরিচালনাকারী ওশানগেট এক্সপেডিশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা স্টকটন রাশ এবং ফ্রান্সের সাবমেরিন অপারেটর পল হেনরি নারজিওলেট।
সাবমেরিনটি ৯৬ ঘণ্টার জরুরি অক্সিজেন নিয়ে সাগরে অভিযান চালাতে পারে আর এই হিসাবে আজ বৃহস্পতিবার অভিযাত্রীদের জন্য তা শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। রোববার দিনশেষে সাগরের তলদেশ থেকে শনাক্ত হওয়া শব্দের উৎস লক্ষ্য করেই এখন উদ্ধার অভিযান চলছে।
এ প্রসঙ্গে বৃটিশ এন্টার্কটিক সার্ভের নৌ-বিশেষজ্ঞ রব লার্টার বলেন, ‘ভিক্টর-৬০০০ এখন সাগরের অতলে উদ্ধার অভিযানের প্রধান ভরসা।’
লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজের মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক আলিস্টার গ্রেগ বলেন, ‘ভিক্টর-৬০০০-এ রয়েছে দুটি ম্যানিপুলেটর আর্ম, যা টাইটানকে আটকে পড়া জায়গাটি থেকে ছাড়িয়ে নিতে ও পানির ওপরে ভাসিয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে। রোবটটির আছে সাগরের নিচে কাজ করার মতো শক্তিশালী আলোর ব্যবস্থা।’
তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, উদ্ধার অভিযান সফল করতে ঠিক কোন জায়গাটিতে টাইটান থাকতে পারে সে সম্পর্কে ধারণা থাকতে হবে, যা এখন একটি দুরূহ কাজ।