নেপালে আবারও ঘটতে চলেছিল ভয়ংকর প্লেন দুর্ঘটনা। মাঝআকাশে দুটি প্লেনের মধ্যে সংঘর্ষ প্রায় ঘটেই গিয়েছিল। ‘ওয়ার্নিং সিস্টেম’র কারণে এ যাত্রায় কোনোমতে রক্ষা! অবতরণের অপেক্ষায় থাকা দুটি প্লেনের মধ্যে দূরত্ব যে দ্রুত শূন্যে নেমে আসছিল, তা খেয়ালই করেননি কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলাররা (এটিসি)। এ ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার জেরে দুই কন্ট্রোলারকে বরখাস্ত করেছে নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (সিএএএন)।
গত শুক্রবার (২৪ মার্চ) কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে অবতরণের অপেক্ষায় থাকার সময় মাঝআকাশে সংঘর্ষের কবলে পড়তে চলেছিল এয়ার ইন্ডিয়া এবং নেপাল এয়ারলাইনসের দুটি প্লেন। কিন্তু ওয়ার্নিং সিস্টেম সতর্ক করায় শেষমুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা এড়াতে সক্ষম হন পাইলটরা।
জানা গেছে, কাঠমান্ডু বিমানবন্দরে বেশি ব্যস্ততার কারণে ১৯ হাজার ফুট উচ্চতায় অপেক্ষা করছিল এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনটি। কিন্তু হঠাৎ সেটি নিচে নেমে আসে এবং ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় উড়ন্ত নেপাল এয়ারলাইনসের প্লেনের সঙ্গে কোনোমতে সংঘর্ষ এড়ায়।
এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনটি সেদিন কেন হঠাৎ নিচে নেমে এলো, এ বিষয়ে ভারতের সিভিল এভিয়েশনের মহাপরিচালককে (ডিজিসিএআই) চিঠি লিখে ব্যাখ্যা দিয়েছে নেপালের বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।
সিএএএন’র মুখপাত্র জগন্নাথ নিরোলা বার্তা সংস্থা পিটিআই’কে বলেছেন, ঘটনাটি মূল্যায়ন এবং সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে ও আমাদের অবহিত করার অনুরোধ জানিয়ে আমরা ডিজিসিএআই’কে চিঠি দিয়েছি।
তিনি জানিয়েছেন, ঘটনাটি খতিয়ে দেখতে একটি কমিটি গঠন করেছে সিএএএন কর্তৃপক্ষ।
ওইদিন নেপাল এয়ারলাইনসের প্লেনটি মালয়েশিয়ার কুয়ালালামপুর থেকে এবং এয়ার ইন্ডিয়ার প্লেনটি ভারতের নয়াদিল্লি থেকে কাঠমান্ডু যাচ্ছিল।
তবে এ ঘটনায় ভারতীয় পাইলটের কোনো ত্রুটি ছিল কি না তা তদন্ত করতে আহ্বান জানিয়েছে নেপাল কর্তৃপক্ষ। নিরোলা বলেছেন, আমরা এয়ার ইন্ডিয়ার পাইলটের সম্ভাব্য ত্রুটির তদন্ত করতে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে ভারতীয় বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি পাঠিয়েছি।
হিমালয় সংলগ্ন পাহাড়ি দেশ নেপাল প্লেন চলাচলের জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। প্রশ্ন রয়েছে তাদের সুরক্ষা ও পরিচালনা ব্যবস্থা এবং কর্মীদের দক্ষতা নিয়েও। নিরাপত্তা উদ্বেগের জন্য নিজেদের আকাশসীমায় নেপালের সব এয়ারলাইনসের প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এয়ার ইন্ডিয়া ও নেপাল এয়ারলাইনসের দুটি প্লেন সংঘর্ষ এড়ানোর ঘটনার দু’মাসেরও কম সময় আগে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে প্লেন বিধ্বস্ত হয়ে নিহত হয়েছিলেন ৭২ আরোহী। ইয়েতি এয়ারলাইনসের সেই প্লেন দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে গঠিত সরকারি কমিটি শিগগির প্রতিবেদন জমা দেবে।