বহুল প্রতীক্ষিত দেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দরের প্রথম টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হতে যাচ্ছে। কক্সবাজারের মহেশখালীতে আজ শনিবার (১১ নভেম্বর) মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দর চ্যানেল উদ্বোধন এবং প্রথম টার্মিনাল নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর তিনি সেখানে স্থানীয় উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন। ইতিমধ্যে সভাস্থল কানায় কানায় ভরে গেছে।
এদিকে দীর্ঘদিন পর প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে মহেশখালীসহ জেলাজুড়ে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। তোরণ, ব্যানার, ফেসটুন ও পোস্টারে ছেয়ে গেছে মাতারবাড়ী।
মাতারবাড়ী প্রকল্পের নথি অনুযায়ী, বন্দরটি দেশের অর্থনীতির জন্য গেম চেঞ্জার হবে। মাতারবাড়ী বন্দরে জোয়ার-ভাটায় যে কোনো সময়ে আট হাজার টিইইউএসর জাহাজ ভিড়তে পারবে। জাহাজ নিয়োজিত করার ক্ষেত্রে শিপিং লাইনগুলো যথেষ্ট সুবিধা ভোগ করবে। ফলে পণ্য পরিবহন খরচ কমবে। এ ছাড়া বন্দর ঘিরে মহেশখালী এলাকায় ব্যাপক শিল্পায়নসহ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে, যা তৈরি করবে কর্মসংস্থানের বিশাল সুযোগ।
প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বন্দরকে কেন্দ্র করে যে পরিমাণ নগরায়ণ হবে তা ওই এলাকাকে দক্ষিণ এশিয়ার সিঙ্গাপুরে পরিণত করবে। বন্দর ঘিরে যে অর্থনৈতিক কর্মযজ্ঞ হবে তা জিডিপিতে ২ থেকে ৩ শতাংশ অবদান রাখবে। ২০২৬ সালে মাতারবাড়ী গভীর সমুদ্রবন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম শুরু হবে। হবে মাতারবাড়ী বন্দর বাণিজ্যিক হাব। বন্দরটিকে বলা হচ্ছে প্যারালাল অর্থনীতির লাইফ লাইন।
দেশের প্রথম ও একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর স্থাপনের জন্য ১৭ হাজার ৭৭৭ কোটি ২০ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্প শুরু হয়। মাতারবাড়ী টার্মিনাল বাস্তবায়িত হলে ১৬ মিটার বা ততধিক গভীরতা সম্পন্ন বাণিজ্যিক জাহাজ গমনাগমনে সক্ষম হবে। বড় ধরনের ফিডার ভেসেল আসবে যাতে অর্থ ও সময় বাঁচবে। এরই মধ্যে ৩৫০ মিটার প্রশস্ত ও ১৬ মিটার গভীরতা সম্পন্ন ১৪ দশমিক ৩০ কিলোমিটার দীর্ঘ অ্যাপ্রোচ চ্যানেলের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। এ ছাড়া ২ হাজার ১৫০ মিটার দীর্ঘ ও দক্ষিণ পার্শ্বে ৬৭০ মিটার দীর্ঘ ব্রেক ওয়াটার (ঢেউ নিরোধক বাঁধ) নির্মাণ কাজও শেষ। প্রকল্পের সড়ক ও জনপথ অংশে ২৭.৭ কিলোমিটার সড়ক নির্মাণের মাধ্যমে বন্দরের সঙ্গে মহাসড়কের সংযোগ স্থাপনের কাজ চলছে।