মন ভরানো ফুটবল বুঝি একেই বলে। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলা, একেরপর এক আক্রমণের পসরা। যদিও প্রথমে গোল হজম করা, তবে সেখান থেকেই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ানো।
সবকিছু একসঙ্গে মিলিয়ে দারুণ এক ম্যাচ উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে দারুণ জয়ে সাফে টিকে রইল জামাল ভূঁইয়া-তপু বর্মণরা।
দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপখ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মালদ্বীপের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বাংলাদেশ। মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচটি ৩-১ গোলে জিতেছে লাল-সবুজরা।
দীর্ঘ ২০ বছর পর মালদ্বীপকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। শেষ দেখায় দলটির কাছে জামালরা হেরেছিল ২-০ ব্যবধানে। ফলে আজ অলিখিত প্রতিশোধও নিয়েছেন ফুটবলাররা।
ম্যাচে ৫০ শতাংশ সময় বল দখলে রেখে গোলের উদ্দেশ্যে ২০বার আক্রমণ চালায় বাংলাদেশ, যেখানে লক্ষ্যে ছিল নয়টি শট। বিপরীতে মালদ্বীপ মাত্র একটি শট লক্ষ্যে রাখতে পারে।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে লেবাননের কাছে হেরেছিল বাংলাদেশ। অন্যদিকে দুর্বল ভুটানকে সহজেই হারায় মালদ্বীপ। ফলে আজকের ম্যাচটা জামা ভূঁইয়াদের জন্য ছিল বাঁচা-মরার ম্যাচ। হারলেই টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেবে লাল সবুজরা।
এমন ম্যাচে শুরু থেকেই প্রভাব বিস্তার করে খেলতে থাকে বাংলাদেশ। প্রথম দশ মিনিটে তিনবার কর্নার আদায় করে নেয় তারা। যদিও সাফল্য পায়নি। মালদ্বীপও রক্ষণ সামলে পাল্টা আক্রমণ চালাতে থাকে।
খেলার ধারার বিপরীতে ১৭ মিনিটে এগিয়ে যায় মালদ্বীপ। দারুণ পাসিং ফুটবলের মাধ্যমে আক্রমণে ওঠার পর ডি বক্সের বাইরে থেকে চমৎকার এক বাঁকানো শটে আনিসুর রহমান জিকোকে ফাঁকি দেন দলটির খেলোয়াড় হামজা মোহামেদ।
গোল হজম করার পর কিছুক্ষণ ছন্নছাড়া ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। তবে অল্প সময়ের মাঝে গুছিয়ে ওঠেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। আক্রমণাত্মক ফুটবলে মালদ্বীপকে কোণঠাসা করে রাখেন তপু বর্মণ-ফাহিম-বিশ্বনাথরা।
সেই ধারায় সাফল্য মেলে ৪২ মিনিটে। শর্ট থ্রো থেকে আক্রমণ শুরু হওয়ার পর গোলপোস্টের কাছে বল পেয়ে যান ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা রাকিব হোসেন। সুযোগ কাজে লাগিয়ে দারুণ এক হেডের মাধ্যমে প্রতিপক্ষের জালে বল জড়ান তিনি।
দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে উজ্জীবিত ফুটবল খেলতে থাকে বাংলাদেশ। এবার রীতিমতো আক্রমণের ঝড় বইয়ে দেয় দলের প্রত্যেকে। সেই ধারাবাহিকতায় ৬৭ মিনিটে এগিয়ে যায় লাল সবুজরা।
এ সময় কর্নার থেকে জটলার মাঝে বল পেয়ে তৃতীয় প্রচেষ্টায় স্কোরশিটে নাম তোলেন তারিক কাজী। যা তার ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় গোল। তবে বেশিক্ষণ আনন্দে থাকতে পারেননি তিনি। ৮০ মিনিটের দিকে ইনজুরির কারণে মাঠ থেকে ছিটকে যান এ ডিফেন্ডার।
মালদ্বীপের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকে দেন শেখ মোরসালিন। ৯০ মিনিটে প্রতিপক্ষের গোলরক্ষককে বোকা বানিয়ে অনন্য দক্ষতায় বল জালে জড়ান তিনি। রেফারি শেষ বাঁশি বাজানোর সঙ্গে সঙ্গে আনন্দে মেতে ওঠে টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া সমগ্র বাংলাদেশ।
এই জয়ের মাধ্যমে গোল ব্যবধানের ভিত্তিতে পয়েন্ট টেবিলের দুইয়ে উঠে এসেছে বাংলাদেশ। শেষ ম্যাচ ড্র করলেও তাই সেমিফাইনালে ওঠার সুযোগ থাকবে দলের সামনে।