নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার পর লিওনেল মেসি ফিরেছেন ফ্রেঞ্চ লিগের ম্যাচে। গতকাল রাতে আজাকসিওর বিপক্ষে পিএসজির গোল-উৎসবের ম্যাচেও তিনি প্যারিস সমর্থকদের মন পাননি। মেসির পায়ে বল যাওয়ার পর দুয়ো দিয়েছেন সমর্থকেরা। ক্লাবের অনুমতি ছাড়াই সৌদি আরবে যাওয়ায় সমর্থকদের একটি অংশের চক্ষুশূলে পরিণত হয়েছেন তিনি। এমনকি নিজের সৌদি সফর নিয়ে ক্ষমা চেয়েও পিএসজি সমর্থকদের ক্ষোভের হাত থেকে বাঁচতে পারছেন না। এর আগে নিষিদ্ধ হওয়ার পরদিন পিএসজি সমর্থকেরা তাঁকে ‘ভাড়াটে খেলোয়াড়’ বলে স্লোগান দিয়েছিলেন।
পিএসজিতে প্রায় দুই বছর ধরে আছেন মেসি। ‘দুয়ো’ অবশ্য তাঁর কাছে নতুন কিছু নয়। এর আগেও কয়েকবারই তিনি সমর্থকদের কাছ থেকে ‘দুয়ো’ শুনেছেন। চ্যাম্পিয়নস লিগে টানা দুবার শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিয়েছে পিএসজি। সমর্থকেরা আগে থেকেই সন্তুষ্ট নয় তাঁর ওপর। চলতি বছর যা ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে।
সৌদি আরব যাওয়ার কারণে মেসিকে দুই সপ্তাহের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল চলতি মাসের শুরুতে। তবে এক সপ্তাহ শেষের আগেই মেসিকে অনুশীলনের অনুমতি দেয় পিএসজি। এর মধ্যেই খবর বেরিয়েছে, মেসি নাকি সৌদি আরবের একটি ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করে ফেলেছেন। যদিও মেসির ঘনিষ্ঠজনেরা সেটি অস্বীকার করেছেন। কিন্তু মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই এ ধরনের সংবাদ পিএসজি সমর্থকদের বিরক্তির বড় কারণ।
আজাকসিওর বিপক্ষে ম্যাচে সমর্থকেরা যে মেসিকে দুয়ো দিয়েছেন, সেটি ম্যাচ শেষে ক্রিস্তফ গালতিয়েরের কথায়ও উঠে আসে। তবে পিএসজি কোচ ব্যাপারটা দেখছেন ভিন্নভাবে। তাঁর দাবি, মেসি দুয়োর চেয়ে হাত তালিই বেশি পেয়েছেন, ‘হ্যাঁ, মেসি যখন বল ধরেছে, তখন গ্যালারি থেকে কিছু হুইসেলের শব্দ পাওয়া গেছে। তবে সেটি ক্ষণিকের জন্য। সঙ্গে সঙ্গে গ্যালারির বাকি অংশ হাত তালি দিয়ে সেই হুইসেলের আওয়াজ ঢেকে দিয়েছে।’
গত কয়েক দিনে মেসির ওপর দিয়ে রীতিমতো ঝড়ই বয়ে গেছে। সৌদি ভ্রমণ নিয়ে বিতর্ক, ক্লাবের নিষেধাজ্ঞা, ইনস্টাগ্রামে ক্ষমা চাওয়া, সৌদি আরবের ক্লাবের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ। কিন্তু কাল আজাকসিওর বিপক্ষে মেসিকে দারুণ মনোযোগীই দেখেছেন গালতিয়ের, ‘আমি যেটা দেখলাম, মেসি ম্যাচে খুবই মনোযোগী ছিল। দলের আক্রমণ তৈরিতেও সে দুর্দান্ত ছিল। সে দলকে খেলিয়েছে, অনেক সুযোগ তৈরি করার পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।
এমন পরিস্থিতি মেসির জন্য নতুন কিছু নয় বলেই মনে করেন পিএসজি কোচ, ‘আমার মনে হয়, সে এ ধরনের পরিস্থিতিতে অভ্যস্ত। সে তাঁর ফুটবল ক্যারিয়ারে এমন পরিস্থিতিতে অনেক পড়েছে। তবে আমি আবার বলতে চাই, মেসিকে দেওয়া প্রতিটি দুয়োই সমর্থকদের অনুপ্রেরণাদায়ী চিৎকারে ঢেকে গেছে।’
ম্যাচের শেষে মেসির পিএসজি সতীর্থ রেনাতো সানচেজ ও দানিলো পাহেইরা দুয়ো দেওয়া সমর্থকদের সমালোচনা করেছেন। সানচেজের মতে, ‘ব্যাপারটা বেশ অদ্ভুতই। এটি মেসির জন্য মেনে নেওয়া কঠিন, ক্লাবের জন্যও বিব্রতকর।’
দানিলো বলেছেন, ‘আপনার সতীর্থ আপনারই দলের সমর্থকদের দুয়ো খাচ্ছে, এটা মেনে নেওয়া খুব কঠিন। কেউ যদি কাউকে ‘দুয়ো’ দেয়, এটা মনে রাখতে হবে, সে পুরো দলকেই ‘দুয়ো’ দিচ্ছে। এটা মেনে নেওয়া কঠিন।’