প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের টিকা দিতে যত টাকাই লাগুক, সরকার তাতে কার্পণ্য করবে না।
আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা ইতোমধ্যে ঘোষণা দিয়েছি, সরকার দেশের সব নাগরিককে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান নিশ্চিত করবে। এ লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য যত টাকাই লাগুক না কেন, আমরা সেই টাকা দেব। বিভিন্ন উৎস থেকে ইতোমধ্যে এক কোটি ১৪ লাখ ছয় হাজার ডোজ টিকা পাওয়া গেছে। প্রয়োজনীয় টিকা কেনার জন্য আগামী অর্থবছরের বাজেটে ১৪ হাজার ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন ভ্যাকসিন নিয়ে গবেষণা চলছিল, তখন থেকেই সরকার ভ্যাকসিন সংগ্রহের জন্য পৃথিবীর সমস্ত জায়গায় চেষ্টা শুরু করে। তখন হয়ত ডব্লিউএইচও অনুমোদনও দেয়নি, কিন্তু তার আগেই আমরা… । এটা দুর্ভাগ্য, ভারতে হঠাৎ করোনা ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেল। তারা এই ভ্যাকসিন রপ্তানি করা বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা সাময়িকভাবে কিছুটা সমস্যায় পড়ে গেছি। কিন্তু বর্তমানে আল্লাহর রহমতে আমাদের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।
চীন, রাশিয়া, যুক্তরাষ্ট্রসহ ভ্যাকসিন উৎপাদনকারী সব দেশ ও কোম্পানির সঙ্গে সরকার যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী সংসদে বলেন, আমরা আশা করছি জুলাই মাস থেকে আরও ভ্যাকসিন আসবে এবং ব্যাপকভাবে আমরা ভ্যাকসিন প্রদান শুরু করব।
শেখ হাসিনা বলেন, তাঁর সরকার বিদেশগামী কর্মীদের আগে টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে, যাতে বিদেশে গিয়ে তাদের কোয়ারেন্টিন করতে না হয়, কর্মস্থলে যেতে কোনো বাধা না আসে। দেশের ৮০ শতাংশ মানুষকে পর্যায়ক্রমে আমরা কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের আওতায় আনার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। কোন ভ্যাকসিন কোন বয়স পর্যন্ত দেওয়া যাবে, তার একটা সীমাবদ্ধতা আছে, এটা ডব্লিউএইচওর নির্দেশ।
সেটা বিবেচনায় রেখে এমনকি স্কুল থেকে শুরু করে এবং উচ্চশিক্ষায় যারা… সকলে যাতে ভ্যাকসিন পায়। এর মধ্যে যেন আমরা স্কুল খুলতে পারি বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে পারি সেই ব্যবস্থাটাও আমরা নেব। এ ছাড়া করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের প্রকোপ এখনো বিদ্যমান থাকায়, মহামারি মোকাবিলায় যে কোনো জরুরি চাহিদা মোকাবিলায় আমরা এই বাজেটে ১০ হাজার কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ রাখার ব্যবস্থা নিয়েছি। দ্রুততম সময়ে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে ১০ হাজার চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগসহ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সংগ্রহ ও স্থাপনের কার্যক্রম অব্যাহত থাকার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক গবেষণা তেমন ছিল না। আমরা তার ওপর এবার গুরুত্ব দিয়েছি। আমরা সমন্বিত স্বাস্থ্য বিজ্ঞান গবেষণা ও উন্নয়ন তহবিল গঠন করেছি। এই তহবিলে আগামী বাজেটে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।