রাজশাহীর বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) প্রক্টর স্বাক্ষরিত ১৭টি বিধিনিষেধ সম্বলিত নোটিশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন রাবি সংসদ। শনিবার (২৫ ডিসেম্বর) সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক মিঠুন চন্দ্র মহন্ত স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো উন্মুক্ত জ্ঞান অর্জনের একটি প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা মুক্ত জ্ঞান আহরণ করবে, সাংস্কৃতিক চর্চা করবে এবং বিভিন্ন গঠনমূলক সংগঠন করে নিজেদের নের্তৃত্বের বিকাশ ঘটাবে। বিশ্ববিদ্যালয় তাদের রাষ্ট্রের জন্য আদর্শিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তোলার নিশ্চয়তা দিবে। কিন্তু সেই জায়গা থেকে দিন দিন পিছিয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়। প্রশাসন শুধু দায় এড়িয়েই যাচ্ছে না বরং শিক্ষার্থীদের সংকুচিত চিন্তাধারায় আবদ্ধ করে তাদের উন্মুক্ত বিকাশের কণ্ঠরোধ করেছে।
নোটিশে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের প্রক্টরিয়াল ক্ষমতা ও শিক্ষার্থীদের শাস্তি দেবার ক্ষমতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয় নোটিশে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কোন নির্দিষ্ট বিশ্লেষণ নেই। ফলশ্রুতিতে কোনো শিক্ষক কিংবা কর্মচারী চাইলে তাদের নিজস্ব পছন্দ কিংবা অপছন্দের জায়গা বিচার করে ব্যক্তি পরিপ্রেক্ষিতে শাস্তি প্রদান করার ক্ষমতা রাখবে।
আরও জানানো হয়, নবীনদের আগমনের এই সময়ে এই নোটিশ জারি করে তাদের মাঝে নিয়মের নামে শাস্তি বিধানের যেসব কথা বলা হয়েছে, সেসব তাদের উন্মুক্ত জ্ঞান আহরণে বাধার সৃষ্টি করবে। তাদের উপর ঘটা অন্যায় মুখ বুঝে সহ্য করে নিতে বাধ্য করার মতো মনস্তাত্তিক অধঃপতন ঘটাবে।
নোটিশে নারী শিক্ষার্থীদের হল সন্ধ্যায় নির্ধারিত সময়ে বন্ধ করার বিষয়ে বলা হয়েছে। প্রক্টরিয়াল অফিস হয়তো বুঝতে চান না নারী শিক্ষার্থীরাও এই পরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থায় স্বকীয় মানুষ হিসেবে পরুষের সাথে সমান তালে কিংবা কখনও পুরুষকে ছাড়িয়ে নিজ যোগ্যতায় নিজ কর্মে আরও শীর্ষে উন্নীত হবার ক্ষমতা রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় নারী-পুরুষ উভয়কেই স্বাবলম্বী মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি করে দেওয়ার অনুপ্রেরণা ধারণ করে। নারী শিক্ষার্থীদের প্রতি এমন বৈষম্যমূলক আচরণ যথেষ্ট নিন্দনীয়।
প্রক্টরের স্বাক্ষরিত নোটিশটি কোন অধ্যাদেশ থেকে নেয়া নয়; বরং বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যালেন্ডার থেকে সংগৃহীত যা মহামান্য রাষ্ট্রপতির অনুমোদনকৃত নয়। অধ্যাদেশের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের নিয়মনীতি শিক্ষার্থীদের উপর চাপিয়ে দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে সংগঠনটি।
বিজ্ঞপ্তিতে নোটিশ প্রত্যাহার ও অধ্যাদেশ অনুযায়ী রাকসু নির্বাচন, হলগুলোর বৈধ সিট নিশ্চিত করা, নিরাপত্তার নামে শিক্ষার্থী হয়রানী বন্ধ করা, ক্যাম্পাসের সুষ্ঠু রাজনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিবেশ সৃষ্টি করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরো কাঠামো ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর আহ্বান জানানো হয়।