তথ্যমন্ত্রী ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিশ্ব অঙ্গনে জননেত্রী শেখ হাসিনার উচ্চতা আর তার সরকারের প্রতি বিশ্ব অঙ্গনের সমর্থন কোন জায়গায়, সেটি নিশ্চয়ই বিএনপি অনুধাবন করতে সক্ষম হয়েছে। সেটি না করতে পারলে বিএনপি ভুল করবে। আজ সোমবার (৮ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সমসাময়িক বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় তিনি এ কথা বলেন।
‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সফরের শেষ পর্যায়ে এখন যুক্তরাজ্যে আছেন। ৯ মে তিনি দেশে ফিরে আসবেন’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তার এই সফর অত্যন্ত সফল একটি সফর। জাপানের সরকার ও জনগণ রাষ্ট্রীয় সফরে যাওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অভাবনীয় মর্যাদা দিয়েছে এবং আমাদের নানা প্রকল্পে ৩০ বিলিয়ন ইয়েন সহায়তার চুক্তি সই করেছে। পদ্মা সেতু থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়া বিশ্বব্যাংক ভুল উপলব্ধি করে শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ করে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে গিয়ে এখন ২.২৫ বিলিয়ন ডলার সহায়তার চুক্তি স্বাক্ষর করেছে।’
যুক্তরাজ্যের নতুন রাজা চালর্সের অভিষেক অনুষ্ঠানে রাজার সঙ্গে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎ ও কুশলবিনিময়ের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ‘যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আমাদের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বলেছেন—শেখ হাসিনা হচ্ছেন আমার ‘আইডল’ এবং শুধু তারই নয়, তার মেয়েদেরও ‘আইডল’।’ ব্রিটেনের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী, কমনওয়েলথ মহাসচিবসহ অনেকেই শেখ হাসিনার সঙ্গে দেখা করেছেন বলে জানান তথ্যমন্ত্রী।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই সফরে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমকে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে একটি সুন্দর নির্বাচন করার ঐকান্তিক ইচ্ছার কথা এবং সকল পর্যবেক্ষককে নির্বাচন দেখার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আর সেই সময় বাংলাদেশে বিএনপির নেতৃবৃন্দ নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিচ্ছে। নির্বাচন প্রতিহত করার বা বর্জনের ঘোষণা গণতন্ত্রকে প্রতিহত করা বা ঠেকিয়ে দেওয়ার ঘোষণার মতো। আসলে বিএনপি দেশে গণতন্ত্র চায় না। বিএনপি সবসময় পানি ঘোলা করতে চায় এবং ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে চায়। বিএনপি নির্বাচন বর্জন করতে পারে, কিন্তু নির্বাচন বন্ধ করা কিংবা ঠেকিয়ে দেওয়ার ধৃষ্টতা দেখানোর সুযোগ নেই। এ দেশের মানুষ বিএনপিকে সেই সুযোগ দেবে না।’
বিএনপির বর্তমান সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নেবে না বলে যে ঘোষণা দিয়েছে সে বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা অবশ্যই চাই বিএনপিসহ সমস্ত রাজনৈতিক দল আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুক। বিএনপি অতীতের মতো নির্বাচন থেকে পালিয়ে বেড়াক, সেটি আমরা চাই না। আমরা বিএনপির সঙ্গে খেলতে চাই, কিন্তু ওরা খেলা থেকে বারবার পালিয়ে যায়, এটিই হচ্ছে দুঃখজনক।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান বলেন, ‘আসলে বিএনপি নানা ভাষায়, নানা ছুতোয়, নানা কৌশলে বলে, কিন্তু তাদের সমস্ত কথার সারমর্ম হচ্ছে এমন ব্যবস্থা চাই, যার মাধ্যমে বিএনপিকে ক্ষমতায় বসানোর নিশ্চয়তা পাবে। সেটি তো নির্বাচন কমিশন দিতে পারবে না, এদেশের জনগণও দিতে পারবে না। এ দেশের সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন কমিশনের অধীনে বিশ্বের অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশের মতো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপির শরিকরা আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা করছে তার অর্থ হচ্ছে, বিএনপি নির্বাচন না চাইলেও শরিকরা নির্বাচন চায়। বিএনপি নির্বাচন থেকে পালিয়ে গেলে শরিকরাও বিএনপি থেকে পালিয়ে যাবে।’
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘ড. ইউনুসের প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চাই, যেভাবেই হোক তিনি নোবেল লরিয়েট এবং একজন নোবেল লরিয়েটের বিরুদ্ধে শ্রমিকরা মামলা করেছে, অন্য কেউ নয়। এ রকম একজন নোবেল লরিয়েট শ্রমিকদের পাওনা বুঝিয়ে দেননি, বারবার তাগাদা দেওয়ার পরও বুঝিয়ে দেননি, বরং অসাধু উপায়ে সেটি সুরাহা করার অপচেষ্টা চালিয়েছিলেন—এ সমস্ত অভিযোগ গুরুতর এবং অত্যন্ত দুঃখজনক। এগুলো আসলে নোবেল পুরস্কারকে কলংকৃত এবং প্রশ্নবিদ্ধ করছে।’
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিষয়টি আদালতে বিচারাধীন, ড. ইউনুসের আবেদন খারিজ করে আদালত বলেছে মামলা চলবে। আশা করব, মামলা নিষ্পত্তি হওয়ার আগেই তার পক্ষ থেকে পাওনা পরিশোধ করে দিয়ে বিষয়টি ফয়সালা হবে।’