লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করতে যুবলীগ নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সমাজের সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতির বিরুদ্ধে আরো কঠোর অবস্থানের কথাও জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুবলীগের সপ্তম কংগ্রেসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি যে অভিযান শুরু করেছেন, সেটি অব্যাহত থাকবে। এর সঙ্গে যুক্ত থাকলে কাউকেই ছাড় দেয়া হবে না, সে যেই হোক। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের জন্য তার কোনো সহানুভূতি নেই।
সরকার তৃণমূল পর্যায়ে আর্থ-সামিজক উন্নয়নে কাজ করছে, জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই চলার পথে কেউ যদি বিপথে যায়; মাদক, সন্ত্রাস, দুর্নীতিতে জড়ায়, তাদের ছাড় দেয়া হবে না। এই দুর্নীতিবিরোধী অভিযান অব্যাহত থাকবে। অপকর্মে যেই জড়াবে তাকে ছাড় দেয়া হবে না। তার জন্য আমার কোনো সহানুভূতি নেই।
তিনি বলেন, জাতির পিতার এই দেশ ব্যর্থ হতে পারে না। দেশকে সফল করেছি। এই সফলতা নিয়ে চলব। জাতির পিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করব।
যুবলীগের গর্বিত ইতিহাসের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সংগঠনটির নেতাকর্মীদের আদর্শ নিয়ে সততার সঙ্গে জীবনযাপন এবং ত্যাগের মহিমায় দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করার নির্দেশ দেন আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যুবলীগে ইতিবাচক ভূমিকা রয়েছে। প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে এই সংগঠনের অগ্রণী ভূমিকা রয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে যুবকরাই জাতির পিতার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে স্বাধীনতা এনে দিয়েছে। যুবলীগ নেতাকর্মীরা এমন কোনো কাজ করবে না যাতে সংগঠনের বদনাম হয়। আদর্শ নিয়ে চলে দেশের কল্যাণে কাজ করে ত্যাগের মহিমায় নিজেকে গড়ে তুলতে হবে। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে।
দেশের মানুষকে নির্যাতন, শোষণ আর বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিতে আওয়ামী লীগ গড়ে উঠেছিল, উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সংগঠিত হয়েছিল বাংলাদেশের মানুষের মুক্তির লক্ষ্য নিয়ে। ক্ষমতা দখল করে, ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে এই দল গড়ে উঠেনি। এই দলের প্রতিটি অঙ্গসংগঠনও গড়ে উঠেছে মানুষের কল্যাণে। স্বাধীনতাকে অর্থবহ করে এর সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য। আদর্শ থেকে বিচ্যুত হলে দেশকে কেউ কিছু দিতে পারে না।
যুবলীগের নেতাকর্মীদের এসব কথা স্মরণ রাখতে বলেন তিনি।
শনিবার বেলা ১১টা ৮মিনিটে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে যুবলীগের কংগ্রেস উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন তিনি।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব মধ্যাহ্নভোজের পর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে হবে। এখানে যুবলীগের চেয়ারম্যান ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করবেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।