ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এর আগের সর্বোচ্চ ছিল ৮ উইকেটে ৩৩৩ রান। ২০১৯ বিশ্বকাপে নটিংহামে অস্ট্রেলিয়ার ৩৮১ রান তাড়া করতে নেমে সেটি করেছিল বাংলাদেশ।
তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। আইরিশদের বিপক্ষে ৩৩৮ রান সংগ্রহ রেকর্ড করেছে টাইগাররা।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ ভালো কাটেনি তামিম ইকবালের। তবে তিন ম্যাচেই ছুঁয়েছিলেন দুই অঙ্ক। আইরিশদের বিপক্ষে সেটিও হলো না। ৩ রান করে ফিরে গেলেন ড্রেসিং রুমে।
শুরুতে অধিনায়ককে হারানোর পর ইতিবাচক ব্যাটিংয়ে আশা দেখাচ্ছিলেন লিটন দাস। কিন্তু বেশি থাকতে পারলেন না স্টাইলিশ ওপেনার। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে আক্রমণে এসে লিটনকে ফেরালেন কার্টিস ক্যাম্পার। ২ চার ও ১ ছয়ে ৩১ বলে ২৬ রান করে ফিরেনে লিটন। পাওয়ার প্লেতে স্রেফ এই তিনটি বাউন্ডারিই পেয়েছে বাংলাদেশ। পঞ্চম ওভারে মার্ক অ্যাডায়ারের বলে আপার কাট করে এখন পর্যন্ত ইনিংসের একমাত্র ছক্কাটি মেরেছেন লিটন।
দশ ওভারের মধ্যে দুই ওপেনারকে হারানোর পর ইনিংস গড়ার অভিযানে নাজমুল হোসেন শান্তর সঙ্গে উইকেটে যোগ দিয়েছেন সাকিব আল হাসান।
পাওয়ার প্লেতে দুই ওপেনারকে হারানোর পর মনে হচ্ছিল, সাকিব আল হাসান ও শান্তর জুটিতে গুছিয়ে নিচ্ছে বাংলাদেশ। এর মধ্যেই অ্যান্ড্রু ম্যাকব্রাইনের অফ স্টাম্পের বাইরের ডেলিভারি টার্নের আশায় দুর থেকে খেলেছিলেন শান্ত। কিন্তু পিচ করার পর ভেতরে ঢোকে ওই ডেলিভারি। শান্তর ব্যাট-প্যাডের বিরাট ফাঁকা জায়গা দিয়ে আঘাত করে অফ স্টাম্পে। ৩৪ বলে ২৫ রান ফিরে গেলেন তরুণ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। এরপর পাঁচ নম্বরে নেমেছেন অভিষিক্ত তৌহিদ হৃদয়।
ইনিংসের মাঝপথে ভালো ভিত পেয়ে গেছে বাংলাদেশ। প্রথম ৩ উইকেট হারিয়ে স্কোরবোর্ডে জমা পড়েছে ১২৫ রান। চতুর্থ উইকেটে অবিচ্ছিন জুটিতে দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিচ্ছেন সাকিব আল হাসান ও তৌহিদ হৃদয়।
হঠাৎই যেন তেতে উঠলেন সাকিব আল হাসান। হ্যারি টেক্টরের করা ৩৫তম ওভারে মারলেন পাঁচটি চার। অন্য বলে দুইসহ ওভার থেকে এলো ২২ রান। একইসঙ্গে বাংলাদেশ ছাড়িয়ে গেল ২০০ রান।
অফ স্টাম্পের অনেক বাইরে ইয়র্কার ধরনের ডেলিভারি করেছিলেন গ্রাহাম হিউম। দূর থেকেই খেলার চেষ্টা করলেন সাকিব। তার ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে গেল কিপার লরকান টাকারের হাতে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানাতেই ড্রেসিং রুমের দিকে হাঁটা ধরলেন সাকিব।
প্রায় ৪ বছর পর সেঞ্চুরির সম্ভাবনা জাগিয়েও স্রেফ ৭ রানের জন্য করতে পারলেন না সাকিব। দায়িত্বশীল ব্যাটিংয়ে ৯ চারে ৮৯ বলে ৯৩ রান করেছেন তিনি।
এ নিয়ে দ্বিতীয়বার নব্বই পেরিয়ে সেঞ্চুরির আগে আউট হলেন সাকিব। এছাড়া দুইবার নব্বইয়ের ঘরে অপরাজিত ছিলেন বাংলাদেশের তারকা অলরাউন্ডার।
সাকিবের বিদায়ে ভেঙেছে তৌহিদ হৃদয়ের সঙ্গে তার ১২৫ বল স্থায়ী ১৩৫ রানের চতুর্থ উইকেট জুটি। নতুন ব্যাটসম্যান আসেন মুশফিকুর রহিম।
যাওয়ার পথে হৃদয়ের সঙ্গে গ্লাভসে টোকা দিলেন, মাথায় হাত রেখে যেন শুভকামনাও জানিয়ে গেলেন মুশফিকুর রহিম। ৪৯ বলে হৃদয়ের সঙ্গে মুশফিকের জুটি ভাঙল তাঁর আউটেই। আগের বলেই গ্রাহাম হিউমকে ইনসাইড-আউটে দারুণ এক চার মেরেছিলেন, এবার স্লো বাউন্সারে টাইমিং ঠিকঠাক করতে না পেরে ফাইন লেগে ক্যাচ দিলেন। তবে এর আগে মুশফিক খেলেছেন ২৬ বলে ৪৪ রানের ঝোড়ো ইনিংস, তিনটি করে চার ও ছক্কায়। হৃদয়ের সঙ্গে তাঁর জুটিতে ৪৯ বলে উঠেছে ৮০ রান।
আউট হয়ে যান হৃদয়ও। ভেতরের দিকে ঢোকা ক্রস সিমের বলটা লেগ সাইডে খেলতে গিয়ে বেসামাল হয়েছিলেন একটু, লাইন মিস করে হয়েছেন বোল্ড। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে অভিষেকে সেঞ্চুরি থেকে ৮ রান দূরেই থামলেন হৃদয়, নড়বড়ে নব্বইয়ে আজ কাটা পড়া দ্বিতীয় ব্যাটসম্যান তিনি। সেঞ্চুরি না পেলেও হৃদয়ের ইনিংসটি দুর্দান্তই, ৮৫ বলের ইনিংসে ৮টি চারের সঙ্গে মেরেছেন ২টি ছক্কা।
মুশফিক ও হৃদয় আউট হবার পর পর একটি ছক্কা মারার পর ফিরেছেন তাসকিন ১১ রান করে ও ১০ বলে ১৭ রান করার পর ডাবলস নিতে গিয়ে রানআউট হন ইয়াসির আলীও।
সব মিলিয়ে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ৩৩৮ রান করে বাংলাদেশ। আইরিশদের হয়ে সর্বোচ্চ ৪ উইকেট সংগ্রহ করেন গ্রাহাম হিউম।