দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের নামে সৌদি আরবে গত কয়েক দিনে অন্তত ৬৭৪ জন সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযান চালানো হয়েছে। ২৯৮ জন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়েছে। এর মধ্যে সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারাও রয়েছেন।
দেশটির দুর্নীতি দমন সংস্থা ‘কন্ট্রোল অ্যান্ড অ্যান্টি-করাপশন অথরিটি’ (নাজাহা) রোববার রাতে এক বিবৃতিতে জানায়, আটকদের বিরুদ্ধে ঘুষ, অর্থ আত্মসাৎ ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে। খবর আল জাজিরার।
এদের মধ্যে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ আট কর্মকর্তা রয়েছেন, যারা ২০০৫ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আরও আছেন দুই বিচারক এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ২৯ কর্মকর্তা। তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ফের শুরু হয় অভিযান। রাজ পরিবারের তিন সিনিয়র সদস্যকে আটক করে সরকার। আটকদের মধ্যে ছিলেন বাদশাহ সালমানের ছোট ভাই প্রিন্স আহমেদ বিন আবদুল আজিজ আল-সৌদ এবং ভাতিজা প্রিন্স মোহাম্মদ বিন নায়েফ। তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়েছে।
তবে সমালোচকরা বলছেন, ক্ষমতা সংহত করতে ও তাড়াতাড়ি বাদশাহ’র সিংহাসনে বসতে দুর্নীতির অভিযানের নামে বিরোধীদের হয়রানি করছেন যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান।
মোহাম্মদ যুবরাজ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার কয়েক মাস পরই তথাকথিত দুর্নীতি দমন সংস্থা গঠন করেন। তার নেতৃত্বে ২০১৭ সালের নভেম্বরে শুরু হয় দুর্নীতিবিরোধী অভিযান, ব্যাপক ধরপাকড়।
এতে সৌদি রাজপরিবারের প্রায় দুই শতাধিক প্রিন্স, মন্ত্রী এবং ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়। আটকদের পাঁচতারকা হোটেল রিটজ শার্লটনসহ রাজধানী রিয়াদের বেশ কয়েকটি বিলাসবহুল হোটেলে বন্দি করে অত্যাচার-নিপীড়ন করা হয়।
এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা এ অভিযানে সম্পত্তি ও নগদ অর্থসহ ১০ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি জরিমানা হিসেবে কোষাগারে জমা হয়। আটক হওয়াদের মধ্যে অনেকেই কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা করে জরিমানা দিয়ে মুক্তি পান।
সে সময় যুবরাজের এ অভিযান নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা হয়। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে হঠাৎ দুর্নীতিবিরোধী অভিযান সমাপ্ত ঘোষণা করেন যুবরাজ।