অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে আর্থিক সেবার আওতায় আনার অংশ হিসেবে স্কুল শিক্ষার্থীরা অগ্রাধিকার পাচ্ছে। আর ব্যাংক হিসাব হওয়ায় ছোটো থেকেই শিক্ষার্থীদের সঞ্চয়ের মনোভাব গড়ে উঠছে। স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রমের জনপ্রিয়তা অব্যাহতভাবে বাড়ছে। ফলে বাড়ছে স্কুল ব্যাংকিংয়ের অ্যাকাউন্টের সংখ্যা ও সঞ্চয় স্থিতির পরিমাণ। স্কুল ব্যাংকিং শুরু হওয়ার ৯ বছরের ব্যবধানে অ্যাকাউন্ট সংখ্যা প্রায় ২০ লাখ হয়েছে। একই সময়ে সঞ্চয়
স্থিতি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৬২৫ কোটি টাকা।
জানা গেছে, স্কুল শিক্ষার্থীদের ব্যাংকিং সুবিধা ও তথ্যপ্রযুক্তিগত সেবার সঙ্গে পরিচিত করানোর লক্ষ্যে বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালের ২ নভেম্বর স্কুল ব্যাংকিং বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে।
পরিসংখ্যান বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৯ সালের ডিসেম্বর শেষে স্কুলগামী শিক্ষার্থীদের ব্যাংক হিসাবসংখ্যা দাঁড়িয়েছে মোট ১৯ লাখ ৯২ হাজার ৯০২টি। ঐ বছরের সেপ্টেম্বরে এর সংখ্যা ছিল ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৯১৩টি। অর্থাত্ তিন মাসের ব্যবধানে একাউন্ট বৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। অপরদিকে, হিসাবগুলোর বিপরীতে মোট জমা হয়েছে ১ হাজার ৬২৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা। যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১ হাজার ৫৪১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। বাংলাদেশে কার্যরত ৫৯টি তপশিলি ব্যাংকের বর্তমানে ৫৫টি ব্যাংক স্কুল ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, সংখ্যা ও স্থিতির দিক থেকে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর অবদান বেশি। বেসরকারি ব্যাংকসমূহ মোট ১৩ লাখ ৫৯ হাজার ৪০৭টি ব্যাংক হিসাব খুলেছে, যা মোট স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের ৬৮ দশমিক ২১ শতাংশ। এসব হিসাবের বিপরীতে ১ হাজার ৩৪৪ কোটি ২৮ লাখ টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে বেসরকারি ব্যাংকগুলো। যা স্কুল ব্যাংকিং হিসাবের মোট স্থিতির ৮২ দশমিক ৬৯ শতাংশ। অন্যদিকে, রাষ্ট্রীয় মালিকানার বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোতে ২৪ দশমিক ৮৭ শতাংশ স্কুল ব্যাংকিং হিসাব খুললেও মোট স্থিতির মাত্র ১৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ তারা সংগ্রহ করেছে।
আমানত সংগ্রহের দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে আছে বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংক লিমিটেড। মোট ৪ লাখ ৩১ হাজার ৮৮টি হিসাব খুলে শীর্ষে আছে ব্যাংকটি। যা মোট হিসাবের ২২ দশমিক ৪২ শতাংশ। মোট স্থিতির ভিত্তিতেও ব্যাংকটির অবস্থান সবার ওপরে। তাদের সংগৃহীত আমানত প্রায় ৪৮৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। যা মোট স্থিতির ৩০ দশমিক ১৭ শতাংশ।