জেদের বন্দিশালায় থাকা তিন হাজারেরও বেশি বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। নববর্ষ উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমার আওতায় তাদের মুক্তি দেওয়া হবে। এর মধ্যে রয়েছে বিদেশি বন্দিও। আজ সোমবার (১৭ এপ্রিল) এ তথ্য জানিয়েছে আল-জাজিরা।
প্রতিবেদনে কাতারভিত্তিক গণমাধ্যমটি জানায়, নববর্ষ উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমার আওতায় তিন হাজার ১১৩ জন বন্দিকে মুক্তি দেবে জান্তা সরকার। এর মধ্যে বিদেশি বন্দি রয়েছে ৯৮ জন। আজ এ ঘোষণা দিয়েছে তারা। তবে, অভ্যুত্থানের পর গ্রেপ্তার কাউকে মুক্তি দেওয়া হবে কি না সে বিষয়ে কোনো কিছু জানানো হয়নি।
২০২১ সালের ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে নোবেলজয়ী নেতা অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে মিয়ানমারের ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। এরপর থেকেই দেশটি বিশৃঙ্খলায় নিমজ্জিত। সামরিক বাহিনীর শাসন ব্যাপক সশস্ত্র প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। জান্তা সরকারের ক্ষমতার দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তারা এখনও দেশটির বিশাল এলাকাযর কর্তৃত্ব নিতে পারেনি। এমনকি সেখানে বিরোধীদের দমনে বিমান ও ভারী অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হচ্ছে।
ক্ষমতা দখলের পর থেকেই বিরোধীদের গ্রেপ্তার করছে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। আন্দোলন দমাতে ও ক্ষমতা ধরে রাখতে তিন হাজার ২৪০ বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে তারা।
বন্দি মুক্তি দেওয়ার ঘোষণার কথা জানিয়ে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট জেনারেল অং লিন দিউ বলেন, ‘নতুন বছর উদযাপনের মধ্যে দিয়ে মানুষের জন্য আনন্দ বয়ে আনতে এবং মানবিক উদ্বেগ দূর করতে এই সাধারণ ক্ষমা।’
তবে মুক্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা নতুন করে কোনো অপরাধ করলে আগের সাজাসহ তাদের দণ্ড ভোগ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সামরিক বাহিনীর এই মুখপাত্র।
রাজনৈতিক বন্দিদের সহায়তা দিয়ে আসা সংস্থা দ্য অ্যাসিস্ট্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিকাল প্রিজনারস বলছে, অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করার জন্য গ্রেপ্তার হওয়া অন্তত ১৭ হাজার ৪৬০ জনকে আটক রাখা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নোবেল জয়ী অং সান সু চি।
বন্দিদের মুক্তি দেওয়া জান্তা সরকারের জন্য নতুন বিষয় নয়। ২০২২ সালেও ২৩ হাজার বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল তারা। তাও আবার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের নববর্ষ উপলক্ষে।