স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব পরিচয় দিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে চিকিৎসকের কাছ থেকে চাঁদা আদায়কারী প্রতারক সামসুদ্দিন মাসুদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। খুলনা জেলার পাইকগাছা থানার একটি মামলায় তাকে রংপুর থেকে গ্রেফতারের পর আজ সোমবার আদালতে পাঠানো হয়েছে। সে একটি সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য। চক্রের অন্যান্যদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক পরিচয় দিয়ে প্রতারক চক্র প্রথমে ফোন করে খুলনার সিভিল সার্জন ডা. নিয়াজ মোহাম্মদকে। সিভিল সার্জনের কাছে জেলার পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনী কনসালটেন্ট ডা. সুজন কুমার সরকারের নম্বর চাওয়া হয়। সিভিল সার্জন নম্বরটি তাকে দেন। এরপর ডা. সুজন কুমার সরকারকে ফোন দিয়ে দাফতরিক খোঁজ খবর নিয়ে কথিত অতিরিক্ত সচিব নাজমুল হক ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করেন। টাকা না দিলে চাকুরীতে সমস্যা হবে বলেও হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। বিব্রত-আতংকিত ডা. সুজন বিকাশে দুই ধাপে ৩৩ হাজার টাকা পাঠান। টাকা পেয়ে প্রতারক চক্র ফোন নম্বরটি বন্ধ করে রাখে। প্রতারনার শিকার হয়েছেন বুঝতে পেরে গত ১৭ জুন ডা. সুজন প্রথমে পাইকগাছা থানায় জিডি ও তদন্তের স্বার্থে ৩ আগষ্ট মামলা করেন।
পুলিশ জানায়, মামলা গ্রহণের পর বিশেষ কৌশলী ছকে তদন্ত শুরু করেন পাইকগাছা থানার ওসি এজাজ শফী। উন্নত তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় ও সোর্স নিয়োগ করে তিনি প্রতারক চক্রের অবস্থান নিশ্চিত হন। এরপর পাইকগাছা থানার এসআই সুকান্ত কর্মকার, এসআই তাকবীর হোসেন ও এএসআই নাজমুল ইসলাম অভিযানে নামেন। গত ৬ আগষ্ট দুপুরে লালমনিরহাট জেলার কালিগঞ্জ থানার কাকিলা নামক স্থান থেকে অতিরিক্ত সচিব পরিচয়দানকারী আ জ ম সামসুদ্দিন মাসুদকে (৩৮) গ্রেফতার করা হয়। সে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার জীবননগর গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের ছেলে।
এ বিষয়ে পাইকগাছা থানার ওসি এজাজ শফী সাংবাদিকদের জানান, গ্রেফতারকৃত মাসুদ দীর্ঘদিন ধরে প্রতারণার সাথে জড়িত রয়েছে। তার সহযোগীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে। রবিবার রাতে তাকে থানায় আনা হয়। সোমবার তাকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। তার বিকাশ নম্বরে বড় বড় অংকের লেনদেনের তথ্য পাওয়া গেছে।
তিনি আরো বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের নামে এ ধরণের প্রতারক চক্র দেশের বিভিন্ন স্থানে সক্রিয় রয়েছে। ইতোপূর্বে তিনি রাজবাড়ি জেলার গোয়ালন্দ ঘাট থানার ওসি থাকাবস্থায় লালমনিরহাট জেলা থেকে ৩ প্রতারককে গ্রেফতার করেছিলেন। তারা সরকারি কর্মকর্তাদের মোবাইল নাম্বার ক্লোন করে বিকাশে টাকা আদায়ে জড়িত ছিল। সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধে মোবাইল ও বিভিন্ন এপস ব্যাবহারে সকলকে আরো সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।