Monday , December 23 2024
Breaking News

মুনিয়া ‘হত্যা’ মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বোনের নারাজি

রাজধানীর গুলশানে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার (২১) ‘হত্যা’ মামলায় মুনিয়ার প্রেমিক বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে যে চূড়ান্ত প্রতিবেদন পুলিশ দাখিল করেছে, তাতে অনাস্থা জানিয়েছেন মুনিয়ার বোন, মামলার বাদী নুসরাত জাহান তানিয়া।

মঙ্গলবার (১৭ আগস্ট) ঢাকার মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এই নারাজি আবেদন দাখিল করে অন্য কেনো সংস্থার মাধ্যমে মামলাটি তদন্তের আবেদন করেছেন তিনি।

আদালত নথি পর্যালোচনা শেষে এ বিষয়ে আদেশ দেবে বলে বাদীপক্ষের আইনজীবী মাসুদ সালাউদ্দিন গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

সঠিক তদন্ত হয়নি এমন অভিযোগ তুলে শুনানিতে তিনি বলেন, “তদন্তে পক্ষপাতিত্ব করা হয়েছে। বিভিন্ন অডিও ভিডিও সারাদেশে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। সুষ্ঠু তদন্ত থেকে মুনিয়ার পরিবারকে বঞ্চিত হয়েছে। তাই অন্য কোনো তদন্ত সংস্থার মাধ্যমে পুনরায় তদন্ত না করা হলে একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ন্যায় থেকে বঞ্চিত হবে।”

আলোচিত এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ১৯ জুলাই আদালতে ‘ফাইনাল রিপোর্ট’ দাখিল করেন।

ঢাকা মহানগর পুলিশের গুলশান বিভাগের উপকমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী সে সময় বলেছিলেন, মুনিয়ার ‘হত্যা’ মামলার আসামি মুনিয়ার প্রেমিক বসুন্ধরার এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায়নি। তাই চূড়ান্ত প্রতিবেদনে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনার’ অভিযোগ এনেছে মুনিয়ার পরিবার।বাদীর অন্যতম আইনজীবী ব্যরিস্টার এম সরোয়ার হোসেন জানান, গত ২৯ জুলাই মামলার ধার্য তারিখেই মামলার বাদী নারাজি আবেদন জমা দিতে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির হয়েছিলেন। কিন্তু লকডাউনে আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ থাকায় তা জমা নেওয়া হয়নি।

এরপর ৮ অগাস্ট আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম শুরু হলে পুলিশের দেওয়া প্রতিবেদন এখনই গ্রহণ না করে নারাজি আবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন তানিয়ার আইনজীবীরা। তা মঞ্জুর করে আদালত সেদিন চূড়ান্ত প্রতিবেদনের গ্রহণযোগ্যতার শুনানির জন্য ১৭ অগাস্ট দিন ধার্য করেন।

গত ১৯ এপ্রিল রাতে ঢাকার গুলশানের একটি ফ্ল্যাট থেকে গলায় ওড়না প্যাঁচানো অবস্থায় ২১ বছর বয়সী মোশারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

সেই রাতেই আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন ওই তরুণীর বোন নুসরাত জাহান তানিয়া।

সেখানে বলা হয়, ‘বিয়ের প্রলোভন’ দেখিয়ে সায়েম সোবহান আনভীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন মুনিয়ার সঙ্গে। ওই বাসায় তার যাতায়াত ছিল। কিন্তু বিয়ে না করে তিনি উল্টো ‘হুমকি’ দিয়েছিলেন মুনিয়াকে।

অভিযোগের বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কখনো কথা বলেননি বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি। এপ্রিলের শেষ দিকে তার আগাম জামিনের জন্য হাই কোর্টে একটি আবেদন করা হলেও মহামারীর মধ্যে লকডাউনে সে আবেদনের শুনানি তখন আর হয়নি।

পুলিশের প্রতিবেদন নিয়ে আপত্তির কারণ ব্যাখ্যা করে বাদীর আইনজীবী বলেন, “নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের শুধুমাত্র ৯(১) ধারার ধর্ষণ নয়, ধর্ষণের ফলে উদ্ভূত বিষয় ৯(২) ধারায় সঙ্গে আসবে। আসবে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারাও। ধর্ষণজনিত কারণে আত্মহত্যা এখানে আসে।”

সোমবার রাতে ঢাকার গুলশানের এই ভবনের একটি ফ্ল্যাট থেকে কলেজছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়।মুনিয়া ঢাকার মিরপুর ক্যান্টনম্যান্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার বাড়ি কুমিল্লার মনোহরপুরে; পরিবার সেখানেই থাকেন। মৃত্যুর মাস দুয়েক আগে এক লাখ টাকায় ভাড়া নেওয়া ওই ফ্ল্যাটে উঠেছিলেন তিনি।

মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর সেখান থেকে তার মোবাইলসহ বিভিন্ন ধরনের আলামত উদ্ধার করে পুলিশ, যার মধ্যে ছয়টি ডায়েরি ছিল। সিসিটিভির ভিডিও পরীক্ষা করে মুনিয়ার ফ্ল্যাটে আনভীরের যাতায়াতের ‘প্রমাণ পাওয়ার’ কথাও সে সময় পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছিল।

আইনজীবী সরোয়ার হোসেন বলেন, “তদন্ত কতৃপর্ক্ষ গুলশানের বাসা থেকে সেই সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করে তার বিশ্লেষণ ও পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে উল্লেখ করেনি। অটোপসি রিপোর্ট দেখেননি অথবা গুরুত্ব দেননি। তদন্তে কী পাওয়া গেলো তা নিয়ে বাদীর সঙ্গে আলাপ আলোচনাও করেননি।”

SHARE

About bnews24

Check Also

উদ্যোক্তা গ্রুপের সহায়তায় যশোর শীতবস্ত্র বিতরণ

উদ্যোক্তা গ্রুপের অর্থায়নে যশোর বসুন্দিয়ায় ১০০০ মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল বিতরনের সময়ে …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *