সারাদেশে চলমান সড়ক এবং সেতুর কাজ দ্রুত এগিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়ে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, করোনাকালের ধীরগতি এখন পুষিয়ে দিতে হবে। আগামী বছরে পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ও বিআরটি প্রকল্প উদ্বোধন করা হবে।
রবিবার (১২ সেপ্টেম্বর) ঢাকা জোনের অধীনে নয়টি সেতু উদ্বোধন ও মতবিনিময় সভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ নির্দেশনা দেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, চলমান নির্মাণাধীন প্রকল্পগুলোর কাজ সম্পূর্ণ হলে সারাদেশে যোগাযোগ খাতে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধিত হবে।
যাত্রাবাড়ী সুলতানা কামাল সড়কের জনভোগান্তি কথা স্মরণ করে দিয়ে মন্ত্রী বলেন, এ বিষয়টির প্রতি গুরুত্বসহকারে নজর দিতে হবে। বনশ্রী-আমুলিয়া-ডেমরা সড়কটি পিপিপি ভিত্তিতে চারলেনে উন্নতিকরণ কাজ দ্রুত করতে হবে। জমি অধিগ্রহণসহ প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিমূলক কাজ আরও দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিতে হবে।
সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয় মাথায় নিয়ে সড়ক নিরাপত্তা কার্যক্রম জোরদার করার জন্যও সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন।
তিনি আরও বলেন, বিশ্বব্যাংক সড়ক নিরাপত্তায় অর্থায়ন করবে বলে বারবার আগ্রহ প্রকাশ করেও সময়ক্ষেপণ করছে, এমতাবস্থায় তারা যদি আবারও বিলম্ব করে তাহলে বাংলাদেশ নিজস্ব অর্থায়নে সড়ক নিরাপত্তা প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে।
ঢাকা সড়ক জোনের অধীনে আজ বিশ্ব ইজতেমা সড়ক চারলেনে উন্নতিকরণ প্রকল্পের আওতায় দেশীও প্রযুক্তিতে তৈরি দৃষ্টিনন্দন কামারপাড়া সেতু, গাজীপুর সড়ক বিভাগের আওতায় ধলাগড় সেতু, পাথর ধারা সেতু, মাওনা-ফুলবাড়িয়া-কালিয়াকৈর-ধামরাই-নবীনগর মহাসড়কে শালদহ সেতু, ফুলবাড়িয়া সেতু, বেগুনবাড়ি সেতু এবং মানিকগঞ্জ সড়ক বিভাগের আওতায় বেনীপুর সেতু, ডেমরান সেতু ও শরীফবাগ সেতুসহ মোট নয়টি সেতুর অনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন সড়ক ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মো. নজরুল ইসলাম, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. আবদুস সবুর এবং ধামরাই প্রান্তে সংসদ সদস্য বেনজির আহমদ।
পরে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সমসাময়িক রাজনৈতিক বিষয়ে ব্রিফিং করেন। এ সময় ওবায়দুল কাদের বিএনপি মহাসচিবের উদ্দেশে বলেন, কার অধীনে নির্বাচন হবে সেটা মীমাংসিত বিষয়, নির্বাচন যথাসময়ে সংবিধান অনুযায়ী হবে। পৃথিবীর অন্যান্য গণতান্ত্রিক দেশে যেভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, বাংলাদেশেও সেভাবে নির্বাচন হবে।
নির্বাচনে কোন পক্ষপাত হবে না জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে আগামী নির্বাচন অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে।
‘নিরপেক্ষ সরকার ও নিরপেক্ষ কমিশন ছাড়া আগামীতে দেশে কোন নির্বাচন হবে না’, বিএনপি নেতাদের এমন হুঁশিয়ারির জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ ধরনের হুমকি প্রতিটি জাতীয় নির্বাচন এবং স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপি নিয়মিতই দিয়ে আসছে, এতে নতুনত্ব নেই। বিএনপি নেতাদের এসব আস্ফালন আষাঢ়ের তর্জন গর্জন সার।
ওবায়দুল কাদের বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে বলেন, কাকে হুঁশিয়ারি দিচ্ছেন? এসব হুমকি- ধামকি আওয়ামী লীগকে দিয়ে লাভ নেই। নির্বাচনি ব্যবস্থা কীভাবে জোরদার করা যায় সে নিয়ে আলোচনা হতে পারে তবে কোন হুমকি-ধমকি দিয়ে নয়। বেগম জিয়া একসময়ে বলেছিলেন পাগল ও শিশু ছাড়া নিরপেক্ষ কেউ নাই, তাহলে মির্জা ফখরুল সাহেবই বলুন, নিরপেক্ষতার সংজ্ঞা কী?
তিনি বলেন, বিএনপি নির্বাচন ও জনগণকে ভয় পায়, তাই তারা নির্বাচনে অংশ নিলেও প্রচার-প্রচারণা করেনা। আবার প্রচার-প্রচারণা চালালেও নির্বাচনের দিন কেন্দ্রে যায় না, কিংবা দুপুরের আগেই কেন্দ্র ছেড়ে চলে যায়। তাই জনগণ এখন আর বিএনপিকে বিশ্বাস করে না।
বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয় জেতার জন্য নয়; তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে বিতর্কিত করতেই নির্বাচনে অংশ নেয় বলেও মন্তব্য করেন ওবায়দুল কাদের।