Monday , December 23 2024
Breaking News

‘বঙ্গবন্ধু থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরেই উন্নয়নশীল দেশ হতো’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু বেঁচে থাকলে স্বাধীনতার ১০ বছরের মধ্যেই বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হতো। জাতির পিতাকে হত্যার পর যারা ক্ষমতায় এসেছিল জেনারেল জিয়া, জেনারেল এরশাদ বা বেগম জিয়ার কথা বলেন, তারা তো কেউ দেশকে উন্নত করতে চাননি। ক্ষমতা তাদের কাছে ছিল ভোগের বস্তু ও বিলাসবহুল জীবন। আর তারা ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট বিলিয়ে দলে টেনে একটি শ্রেণি তৈরি করল। সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে কেউ এগিয়ে আসেনি।

রোববার (২৮ নভেম্বর) একাদশ জাতীয় সংসদের পঞ্চদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, সব বাধাবিপত্তি ও ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এই গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। অনেক ধরনের চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে। সেগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে। যতই সমালোচনা হোক বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে।

বক্তব্যের প্রায় পুরো অংশ জুড়েই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তোরণের সার্বিক প্রেক্ষাপট এবং এক্ষেত্রে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপগুলো তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

সরকার প্রধান বলেন, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে গ্রাজুয়েশন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। জনগণের সার্বিক উন্নয়নে আমরা প্রচেষ্টা চালিয়েছি। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতার জন্মশত বার্ষিকীতে এই অর্জন আমাদের জন্য অনেক গৌরবের। এটি বাঙালি জাতির বিরল সম্মান ও অনন্য অর্জন। সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এগিয়েছি বলেই আমরা অর্জন করতে পেরেছি। অনেক সমালোচনার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সমালোচনায় আমরা কান না দিয়ে অভীষ্ঠ লক্ষ্য নিয়ে এগিয়েছি। সঠিক দিক নির্দেশনা নিয়েই রাষ্ট্র পরিচালনা করি।

বিগত তিনটি সংসদ নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, জনগণ প্রতিটি নির্বাচনে বিজয়ী করার কারণে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করেছি। এই কাজ আমরা সহজভাবে করতে পেরেছি কিন্তু তা নয়। এই যাত্রাপথ কখনো সুগম ছিল না। আমাদের অনেক প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করতে হয়েছে। অনেক সমালোচনা শুনতে হয়েছে। আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা, গাড়িতে আগুন, অগ্নিসন্ত্রাস, হরতাল, অবরোধ- সেই অবরোধ বিএনপি এখনো প্রত্যাহার করেনি।

তিনি আরও বলেন, উন্নয়নের পথে বাধা সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করা হয়েছে। একই সঙ্গে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হয়েছে। এরপরে এই কোভিড-১৯ও আমাদের মোকাবিলা করতে হয়েছে। বিশ্বের অর্থনীতির চাকা যখন স্থবির তখন আমরা চাকা সহজ রেখেছি। এর ফলাফল দেশের অর্থনীতি গতিশীল রেখে সামনে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ২০৪১ সালে উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করা। এজন্য আমরা প্রেক্ষিত পরিকল্পনা করেছি। এটা বাস্তবায়ন করতে পারলে বাংলাদেশের মানুষ সুন্দর জীবন পাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, উন্নয়নশীল দেশে যাওয়ার কারণে আমরা সুবিধা যেমন পাব, তবে স্বল্পোন্নত দেশের সব সুযোগগুলো পাব না। অবশ্য আমরা ২০২৬ সাল পর্যন্ত সময় চেয়ে নিয়েছি করোনাকালের সময়ের ক্ষতি পিষিয়ে নেওয়ার জন্য। এটা সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে ব্রান্ডিং করার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।

উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা প্রাপ্তি দেশের জনগণেরই উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, যতই সমালোচনা হোক বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি এবং করে যাব। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এগিয়ে যাবে। বাংলাদেশের এই গতি যেন আর কেউ রোধ করতে না পারে। অনেক রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র থাকবে। সেগুলো মাথায় নিয়ে আমাদের চলতে হবে।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের হত্যার প্রসঙ্গ টেনে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এসময় আবেগপ্রবণ হয়ে যান। তিনি বলেন, যাদের জন্য জাতির পিতা সারাটা জীবন ত্যাগ স্বীকার করেন, সেই বাঙালি জাতির হাতে তার জীবন দিতে হলো।

এ সময় দলের দায়িত্ব নেওয়ার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সবকিছু জেনে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পিতার স্বপ্ন পূরণের জন্য আমি দেশে ফিরে আসি। সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করে যাচ্ছি। বার বার আঘাত এসেছে, কিন্তু কেন জানি না আল্লাহ রাব্বুল আলআমিন বারবার বাঁচিয়েছেন। সেবা করার সুযোগ পেয়েছি বলেই একটা মার্যাদায় বাংলাদেশকে উন্নীত করার সক্ষম হয়েছি।

SHARE

About bnews24

Check Also

২১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ যাবেন

১২ বছর ৬ মাসের কম বয়সী ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ যাবেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *