রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেছেন, ইউরোপে কোনো প্রকার যুদ্ধ চায় না রাশিয়া। তবে নিরাপত্তার বিষয়ে রাশিয়ার উদ্বেগের বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। মঙ্গলবার মস্কোতে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শুলৎজের সঙ্গে চার ঘণ্টা বৈঠকের পর এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সম্প্রতি ইউক্রেন ঘিরে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশের জেরে উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে তা প্রশমিত করতে শেষ ইউরোপীয় নেতা হিসেবে ওলাফ শুলৎজ এ সফর করেন।
সংবাদ সম্মেলনে যুদ্ধের সম্ভাবনার বিষয়ে পুতিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা কি তা চাই, না চাই না? অবশ্যই চাই না। এ কারণেই আমরা আপস করার জন্য আলোচনা ও প্রস্তাব এগিয়ে নিচ্ছি।’
তিনি আরও বলেন, রাশিয়ার ‘মৌলিক’ নিরাপত্তাবিষয়ক উদ্বেগকে আমলে নিতে ব্যর্থ হয়েছে ন্যাটো। পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনের ন্যাটোতে যোগদানের প্রশ্ন এখনই সমাধান হওয়া উচিত।
অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে শুলৎজ বলেন, রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশ ’কল্পনাতীত’। কিন্তু কূটনীতিক সমাধানের মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। এদিকে এর আগে মঙ্গলবার ইউক্রেন সীমান্তে মোতায়েন রাশিয়ার কিছু সৈন্যকে সরিয়ে আনা হয়েছে বলে রুশ সামরিক বাহিনী জানিয়েছে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো জানিয়েছে, রাশিয়ার এই বিষয়ে ঘোষণা ‘সতর্ক ইতিবাচকতার’ ইঙ্গিত দিয়েছে; কিন্তু এখনো পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। সোমবার কিয়েভে যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অপরদিকে ইউক্রেন থেকে অনেক দেশ তাদের নাগরিকদের স্বদেশে ফেরার জন্য আহ্বান জানিয়েছে।
এর আগে ২০১৪ সালে ইউক্রেনে রুশপন্থি সরকারের পতনের পর রাশিয়া দেশটিতে আগ্রাসন চালিয়ে ক্রিমিয়া অঞ্চলটি দখল করে নেয়। পাশাপাশি মস্কোর পৃষ্ঠপোষকতায় পূর্ব ইউক্রেনে বিপুল অঞ্চল দখল করে নেয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহী গোষ্ঠী। ওই সংঘর্ষ বন্ধে ফ্রান্স ও জার্মানির মধ্যস্থতায় ২০১৫ সালে বেলারুশের মিনস্কে ইউক্রেন ও রাশিয়া অস্ত্রবিরতি চুক্তি করে।
গত বছরের ডিসেম্বরে ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়ার সৈন্য সমাবেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিবেদনের পর দুই দেশের মধ্যে আবার সম্পর্কে উত্তেজনা শুরু হয়