দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো রাজধানীর বুকে ছুটতে যাচ্ছে স্বপ্নের মেট্রোরেল। ঘণ্টায় ১০০ কিলোমিটার গতির এই বিদ্যুৎচালিত মেট্রোরেল চালুর মধ্য দিয়েই আধুনিক নগরায়নের নতুন অধ্যায় সূচিত হচ্ছে।
বুধবার (২৮ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় মেট্রোরেলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই মেট্রোরেলের টিকিট কেটে প্রথম যাত্রীও হচ্ছেন তিনি।
উদ্বোধনের পরদিন অর্থাৎ বৃহস্পতিবার থেকে মেট্রোরেলে চড়তে পারবেন সাধারণ যাত্রীরা। ইতোমধ্যে মেট্রোরেল পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট লিমিটেড (ডিএমটিসিএল) যাত্রীদের জন্য বেশ কিছু নির্দেশনা ও বিধিনিষেধ জারি করেছে। এরমধ্যে একটি হলো— টিকিটে নির্ধারিত দূরত্বের চেয়ে বেশি পথ গেলে যাত্রীকে জরিমানা হিসেবে ১০ গুণ ভাড়া দিতে হবে, অন্যথায় কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
মেট্রোরেল আইনে-২০১৫ অনুযায়ী, মেট্রোরেলে অনুমোদিত দূরত্বের বেশি ভ্রমণ করলে বা ভাড়া এড়ানোর উদ্দেশ্যে অন্য কোনো কৌশল অবলম্বন করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। এ জন্য মেট্রোরেলে যাতায়াতের ভাড়ার ১০ গুণ পর্যন্ত অর্থদণ্ড, অনাদায়ে অনধিক ৬ মাসের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে।
উদ্বোধনের পর প্রথম দিকে সকাল ৮টা থেকে দিনে চার ঘণ্টা করে ট্রেন চলবে। উত্তরা উত্তর স্টেশন থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত বিনা বিরতিতে চলবে ট্রেন। ২০ মিনিটে গন্তব্যে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। মাঝপথে কোথাও থামবে না।
মেট্রোরেলের প্রতি কিলোমিটার ভাড়া হবে ৫ টাকা করে। সর্বনিম্ন ভাড়া ২০ টাকা। সর্বোচ্চ ভাড়া ১০০ টাকা। তবে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ভাড়া মওকুফ থাকবে। মেট্রোরেলে মাসিক, সাপ্তাহিক, পারিবারিক এবং কার্ডে ভাড়া দেওয়ার বিশেষ সুবিধা থাকবে। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ব্যক্তিরা প্রতিবার ভ্রমণে পাবেন বিশেষ ছাড়। তবে শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ পাস থাকছে না। এ ছাড়া ৩ ফুটের কম উচ্চতার শিশুদের অভিভাবকের সঙ্গে ভ্রমণের ক্ষেত্রে টিকিট লাগবে না।
মেট্রোরেলে যাতায়াতের জন্য টিকিট কাটার দু’টি পদ্ধতি থাকছে। এক. ‘সিঙ্গেল জার্নি টিকিট’ দুই. ‘এমআরটি পাস।’ মেট্রোরেলে ভ্রমণের জন্য প্রথমদিকে কেবল স্টেশনের কাউন্টার থেকে এমআরটি পাস ইস্যু করা হবে। পরবর্তীতে মোবাইল ও ওয়েব অ্যাপ্লিকেশন্সের মাধ্যমেও এমআরটি পাস রিচার্জ করা যাবে। এর বাইরে স্টেশনের কাউন্টার কিংবা টিকিট বিক্রির মেশিন থেকে নির্দিষ্ট যাত্রার টিকিট কেনা যাবে।