সিআর আই সি কে ই টি! ইংরেজিতে ক্রিকেট লিখতে সাতটি বর্ণের প্রয়োজন। সাত সংখ্যাকে সৌভাগ্যের প্রতীক হিসেবে ধরা হয়। স্বর্গের সংখ্যাও সাতটি! এতকিছু কেন নিয়ে আসা? কারণ, ক্রিকেট নামক খেলাটি ভক্তদের কাছে স্বর্গসুখের চেয়ে কম নয়। নেপালের ক্রিকেটাঙ্গনে এখন সত্যিই সুখের ছোঁয়া লেগেছে। পরিশ্রম ও সৌভাগ্যের মিশেলে নিজেদের ক্রিকেটকে হিমালয়সম উচ্চতায় নিয়ে গেছে তারা।
ক্রিকেটারের মতো ভক্তরাও নিজেদের ছাড়িয়ে গেছেন। এতটাই যে, বৃষ্টিতে ম্যাচ বন্ধ থাকলেও সমর্থকরা মাঠে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছাতা মাথায়! তাঁদের এই ক্রিকেট প্রেম মুগ্ধ করেছে সবাইকে।
আজ মঙ্গলবার (২ মে) এসিসি মেন’স প্রিমিয়ার কাপে আরব আমিরাতকে ৭ উইকেটে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নেপাল। ম্যাচটি শুরু হয়েছিল গতকাল সোমবার (১ মে)। নেপালের কির্তিপুরে ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠে হওয়া ম্যাচটিতে বড় বাধা ছিল বৃষ্টি। বৃষ্টি কখনও কখনও আশীর্বাদ হয়ে আসে। শুদ্ধ করে দেয় প্রকৃতিকে। প্রকৃতির সঙ্গে এমনিতেই সখ্যতা নেপালের। হিমালয়কন্যা নেপাল কাল আবার উন্মুক্ত হয় অপরুপ সাজে।
ঝুম বৃষ্টিতে মাঠকর্মীরা ছুটছিলেন পিচ ঢাকতে। ম্যাচ অফিশিয়ালরা চলে গেছেন মাঠের বাইরে। ক্রিকেটাররা ড্রেসিংরুমে। রইলো বাকি দর্শকরা। তখনই দেখা মিলল রঙিন এক দৃশ্যের। সব দর্শকের মাথায় ছাতা। মাঝখানে উঁকি দিচ্ছে নেপালের পতাকা। একদিকে বৃষ্টির রিনিঝিনি, অন্যদিকে পুরো গ্যালারিজুড়ে ছাতার বাহার। বর্ণিল চেহারা এসে যেন শুদ্ধ করে দেয় ত্রিভুবন বিশ্ববিদ্যালয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেট মাঠকে।
ক্রিকেট খেলা চলার সময় মাঠে লোডশেডিং বহুবারই হয়। কিছুক্ষণের জন্য অন্ধকার স্টেডিয়াম আলোকিত হয় গ্যালারির দর্শকদের মোবাইলের ফ্ল্যাশে। এটি বেশ পরিচিত দৃশ্য। শুধু ক্রিকেট নয়, অন্য খেলাতেও হরহামেশা দেখা যায়। তবে ছাতা মাথায় ঝুম বৃষ্টি উপেক্ষা করে সবার অপেক্ষা বোধহয় খুব কমই দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া।
শুধু তাই নয়, দেখা গিয়েছে গ্যালারির গা ঘেঁষে থাকা গাছে উঠে খেলা দেখছেন সমর্থকরা। বৃষ্টিতে গাছ পিচ্ছিল হয়ে থাকতে পারে, ঘটতে পারে বিপদ, তা নিয়ে মাথাব্যথা নেই তাদের।
ভালোবাসায় পাগলামি না থাকলে পূর্ণতা আসে না। ভক্তরা ভালোবেসে পূর্ণতা এনেছেন, নেপালের ক্রিকেটাররা সেসবের প্রতিদান দিয়েছেন। ২০২৩ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে আগেই সুযোগ করে নিয়েছে নেপাল। এবার আরব আমিরাতকে হারিয়ে সুযোগ পেল এশিয়া কাপে। নেপালের ক্রিকেটে হিমালয়ের যে নির্মল হাওয়া বয়ে চলেছে, তার সুবাতাস গায়ে লাগছে গোটা ক্রিকেট দুনিয়ার।