Monday , December 23 2024
Breaking News

দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ থ্যালাসেমিয়া: প্রধানমন্ত্রী

লাসেমিয়া বাহকের সংখ্যা দিনদিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি এ রোগ বিষয়ে আগে থেকে সচেতনতামূলক দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। বলেছেন, ‘বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিয়ের আগে এই রোগের জীন বাহক কিনা, তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’ 

আগামীকাল সোমবার (৮ মে) বিশ্ব থ্যালাসেমিয়া দিবস। এ দিবস উপলক্ষে আজ রোববার দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া একটি বংশগত রক্তস্বল্পতাজনিত দুরারোগ্য ব্যাধি। এ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশ থ্যালাসেমিয়া সমিতি তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশে এই রোগের জীন বাহকের সংখ্যা প্রায় দেড় কোটি। বাহকের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের সার্বিক সুস্বাস্থ্যের জন্য হুমকিস্বরূপ। বাহকে-বাহকে বিয়ে হলে দম্পতির সন্তান থ্যালাসেমিয়া রোগী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিধায় বিবাহের পূর্বে এই রোগের জীন বাহক কিনা, তা জেনে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি।’ 

শেখ হাসিনা বলেন, ‘দুরারোগ্য ব্যাধি থ্যালাসেমিয়া এবং এর বাহকে-বাহকে বিয়ে প্রতিরোধের জন্য দেশের প্রতিটি বাড়ি ও মহল্লায় সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে সরকারের পাশাপাশি আমি সকল পেশাজীবী ব্যক্তি ও সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, গণমাধ্যম, অভিভাবকসহ সচেতন নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই। সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় স্বাস্থ্যখাতে ‘রূপকল্প-২০৪১’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে আমরা সক্ষম হব, ইনশাল্লাহ।’

বাণীতে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার পরপরই দেশের চিকিৎসা ব্যবস্থার উন্নয়নে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠাসহ বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেন। জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে এবং জনসাধারণকে সুলভে মানসম্মত স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও পরিবার কল্যাণ (এইচএনপি) সেবা প্রদানের মাধ্যমে একটি সুস্থ, সবল ও কর্মক্ষম জনগোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ সরকার ব্যাপক উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে।’ সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা একটি গণমুখী স্বাস্থ্যনীতি প্রণয়ন করে যুগোপযোগী স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নতুন হাসপাতাল, নার্সিং ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠাসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। সারা দেশে হাসপাতালগুলোর শয্যা সংখ্যা বৃদ্ধিসহ চিকিৎসক, নার্স, সাপোর্ট স্টাফের সংখ্যাও বৃদ্ধি করেছি। গ্রাম পর্যায়ে জনগণের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিতে সারা দেশে প্রায় সাড়ে ১৮ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে।  কমিউনিটি ক্লিনিক ও ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের মাধ্যমে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে ফ্রি স্বাস্থ্য, পরিবার কল্যাণ ও পুষ্টি সেবা প্রদান করা হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের হাসপাতাল থেকে মোবাইল ফোন ও অনলাইন প্লাটফর্মের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা চালু করা হয়েছে।’  

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে গত ১৪ বছরে স্বাস্থ্যখাতের উন্নয়নে প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধিসহ মাতৃমৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু ও অনূর্ধ্ব-৫ বছর বয়সী শিশু মৃত্যু হার, অপুষ্টি, খর্বতা, কম-ওজন ইত্যাদি হ্রাসে ক্রমাগত উন্নতি হচ্ছে। সম্পদের সীমাবদ্ধতা থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশ স্বাস্থ্য সম্পর্কিত এমডিজি লক্ষ্য অর্জনে অসাধারণ সফলতা দেখিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন অভীষ্টসমূহ (এসডিজি) অর্জনে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। চতুর্থ স্বাস্থ্য, জনসংখ্যা ও পুষ্টি সেক্টর কমসূচি (৪র্থ এইচপিএনএসপি) এর মোট ২৯টি অপারেশনাল প্ল্যানের আওতায় ২০১৭-২০২২ মেয়াদে সেক্টর ওয়াইড কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এ কর্মসূচির মাধ্যমে মা ও শিশুর জন্য পুষ্টি ও স্বাস্থ্যসেবা, সংক্রামক ও অসংক্রামক রোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনজনিত নতুন রোগ নিয়ন্ত্রণ, উন্নত ও দক্ষ ঔষধখাত এবং চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণ প্রদানসহ দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন করা হচ্ছে।’

SHARE

About bnews24

Check Also

২১১১ জন মুক্তিযোদ্ধার তালিকা থেকে বাদ যাবেন

১২ বছর ৬ মাসের কম বয়সী ২ হাজার ১১১ জন মুক্তিযোদ্ধা তালিকা থেকে বাদ যাবেন …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *