জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া কেউ গণমানুষের কথা ভাবেনি বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একমাত্র আওয়ামী লীগই গণমানুষের কথা ভেবে দেশের উন্নয়ন করছে। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
রোববার (২০ আগস্ট) সকালে বিটিআরসি ও তথ্য কমিশনের নবনির্মিতি ভবন উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী নিজের বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে ভবন দুটি উদ্বোধন করেন। এছাড়া বিএফডিসি কমপ্লেক্স নির্মাণকাজের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করেন তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, ‘কোনো রাখঢাক নয়, জনগণের জন্য কাজ করে আওয়ামী লীগ। স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সার্বিক উন্নয়নে কাজ করছে সরকার। বর্তমানে টেলিডেনসিটি ১০৪ শতাংশে উন্নীত হয়েছে, যা অভাবনীয়। দেশকে আধুনিক প্রযুক্তিজ্ঞানসম্পন্ন করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ।’
শেখ হাসিনা বলেন, তথ্য চাওয়া ও পাওয়া জনগণের অধিকার। আওয়ামী লীগের ভেতর গোপনীয়তা বলে কিছু নেই। জনগণকে সম্পৃক্ত করেই সরকার দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছে।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী বিএনপি সরকারের সমালোচনা করে বলেন, বিএনপির আমলে দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে পিছিয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে দেশকে তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে সরকার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান লঙ্ঘন করে অবৈধভাবে সামরিক শাসন জারি করে যারা সরকারে এসেছিল, তারা কখনোই গণমানুষের কথা ভাবেনি। সেটা জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়া যেই হোক। ক্ষমতাকে ভোগ করা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের অত্যাচার করা-এটাই তারা জানতো। বর্তমানে দুর্যোগ ও অগ্নিসন্ত্রাস মোকাবিলা করেই এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।
বিএনপির সময় তথ্য প্রযুক্তি খাতে কিছুই হয়নি জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, কিন্তু আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে সব ক্ষেত্র আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন জনগোষ্ঠী গড়ে তুলছি। তথ্য চাওয়া ও পাওয়া মানুষের অধিকার। আওয়ামী লীগ সরকার মোবাইল ফোনকে সার্বজনীন করেছে।
সিনেমা প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, কলকাতা থেকে এই উপমহাদেশে সিনেমার যাত্রা শুরু। আমাদের সিনেমা শিল্পের যাত্রা জাতির পিতার হাত ধরে। উনি শিল্পমন্ত্রী থাকা অবস্থায় এফডিসি নির্মাণ করেন।
‘সিনেমায় জনসাধারণের জন্য বার্তা থাকতে হবে। মাঝে পরিবার নিয়ে সিনেমা দেখা যেত না। এখন তার পরিবর্তন হয়েছে। এখন আধুনিক প্রযুক্তিতে সিনেমা দেখানো হয়। হল মালিকদের সিনেপ্লেক্স তৈরির সুযোগ করে দিয়েছি। এখন ভালো সিনেমা নির্মাণ হচ্ছে, বিদেশে আমাদের সিনেমা প্রসংশা পাচ্ছে। চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা দিয়ে সুবিধার ব্যবস্থা আমরাই করেছি’, যোগ করেন তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, শিল্পী কল্যাণ ট্রাস্ট আমরা গঠন করেছি। যন্ত্রশিল্পী থেকে শুরু করে সব শিল্পীদের সহায়তা করেছি। মানসম্মত সিনেমা নির্মাণের সব ব্যবস্থা করেছি। এফডিসি কমপ্লেক্স করছি।
তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, শিশুদের জন্য সিনেমা করতে হবে। যারা সিনেমা নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত, তাদের শিশুদের জন্য সিনেমা নির্মাণ করার অনুরোধ করছি।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, আগামীকাল ২১ আগস্ট। এই ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে আমরা একটি র্যালি করছিলাম। কারণ তার কিছুদিন আগে সিলেটে ব্রিটিশ হাইকমিশনারের ওপর গ্রেনেড হামলাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বোমা হামলা-সন্ত্রাস চলছিল। কিন্তু সেই র্যালিতে প্রকাশ্য দিবালোকে গ্রেনেড হামলা করা হয়। সেই গ্রেনেডের আঘাতে আমাদের নারীনেত্রী আইভি রহমানসহ ২২ জন নেতাকর্মী এবং দুজন অজ্ঞাত নিহত হয়। লক্ষ্যটা ছিল আমি এবং আমরা যারা সেই ট্রাকের মঞ্চে ছিলাম তাদের হত্যা করা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা মানবঢাল রচনা করেই আমাকে রক্ষা করেছিলেন। এটা বোধহয় আমাদের ভাগ্য যে, ওই ট্রাকে কোনো গ্রেনেড পড়েনি, ট্রাকের সঙ্গে লেগে সেটা মাটিতে পড়ে যায়। আমাকে যে মানবঢাল হয়ে রক্ষা করেছিলেন মোহাম্মদ হানিফ তার সমস্ত মাথায় স্প্লিন্টার পড়ে। ওইদিন আমাদের অনেকে আহত হয় এবং মারা যায়।