প্রতিরক্ষা চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সংলাপে বসছে বাংলাদেশ। দুদিনের এই সংলাপে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বাংলাদেশ কীভাবে অবদান রাখবে তা নিয়ে তাৎপর্যপূর্ণ আলোচনা হবে। একইসঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন অ্যাগ্রিমেন্ট (জিসোমিয়া) চূড়ান্ত হতে পারে।
বুধবার (২৩ আগস্ট) ঢাকায় এই সংলাপ অনুষ্ঠিত হবে। দুই দেশের প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠানের বিষয়টি সোমবার কূটনৈতিক সূত্র গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।
সংলাপ প্রস্তুতির সঙ্গে যুক্ত ঢাকার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ১০ম প্রতিরক্ষা সংলাপে বাংলাদেশের নেতৃত্ব দেবেন সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের (এএফডি) অপারেশন ও পরিকল্পনা অনুবিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল হুসাইন মুহাম্মাদ মাসীহুর রহমান।
অপরদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্ব দেবেন দেশটির ভারত–মহাসাগরীয় কমান্ডের কৌশলগত পরিকল্পনা ও নীতি বিষয়ক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল টমাস জে জেমস।
সূত্র জানায়, সংলাপে দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যকার সহযোগিতা, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, দুর্যোগ মোকাবিলা, শান্তিরক্ষা ও প্রতিষ্ঠা, প্রশিক্ষণ, দুই দেশের সামরিক কর্মকর্তাদের সফর বিনিময়, জঙ্গিবাদ দমন, আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হবে।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এশিয়া অঞ্চলে যেকোনো মূল্যে নিজেদের উপস্থিতি ও প্রভাব নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। আর এ উপস্থিতি নিশ্চিতে আইপিএসে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার তাদের অন্যতম উপাদন।
এছাড়াও চীনের প্রভাব কমানোর লক্ষ্যে অবাধ, মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল প্রতিষ্ঠা চায় যুক্তরাষ্ট্র।
বিগত ২০১২ সাল থেকে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভিন্ন স্তরের সংলাপ চলছে। ঢাকা বলছে, এবার সংলাপে ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বিষয়ে নিজেদের অবস্থান খোলাসা করা হবে।
এদিকে ফোর্সেস গোল ২০৩০ বাস্তবায়নে সামরিক বাহিনীকে যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে চায় বাংলাদেশ। সমরাস্ত্র ক্রয়ে রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা কাটাতে অন্যান্য উৎসের পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকেও অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র কিনতে চায় সরকার।
যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ নবম প্রতিরক্ষা সংলাপে দেশটির কাছ থেকে সমরাস্ত্র ক্রয় নিয়ে আলোচনা হয়েছিল। ২০১৮ সালে অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র ক্রয়ের প্রস্তাবটি বাংলাদেশই দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, প্রতিরক্ষা চুক্তি ছাড়া অ্যাডভান্সড মিলিটারি হার্ডওয়্যার বিক্রি করে না যুক্তরাষ্ট্র। তাই অ্যাডভান্সড মিলিটারি হার্ডওয়্যার পেতে দেশটির সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি জিসোমিয়া সইয়ের তাগিদ রয়েছে ওয়াশিংটনের।
বাংলাদেশও চুক্তিটি সইয়ে নীতিগতভাবে সম্মত। এরইমধ্যে প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়া নিয়ে দুদেশের মধ্যে ৩ দফা আলোচনা হয়েছে। বুধবার হবে আলোচনার চূড়ান্ত পর্ব।
যদিও সম্প্রতি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সাংবাদিকদের প্ররশ্নের জবাবে বলেছেন, নির্বাচনের আগে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি হওয়ার সম্ভবনা নেই।