‘সামাজিক ও অর্থনৈতিক সকল সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান এখন সুদৃঢ়। বিগত দশ বছরে দারিদ্র্য ৪০ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নেমে এসেছে। এ সকল অর্জন সম্ভব হয়েছে নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের কারণে। সামাজিক নিরাপত্তা বেস্টনীর আওতায় নিশ্চিত করা হয়েছে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ নানা সুবিধা। বর্তমানে জিডিপি ৮ শতাংশ যা উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে ওঠার পূর্বাভাস।’- জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এসব কথা বলেছেন।
স্পিকার বলেন, অসমতা ও বৈষম্য দূর করে নারীদেরকে উন্নয়নের মূল স্রোতে সম্পৃক্ত করতে হবে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী নারীদের পিছিয়ে রেখে প্রকৃত টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি) অর্জন সম্ভব নয়। দারিদ্রের দুষ্ট বৃত্ত থেকে বের করে আনতে হবে নারীদের। তবেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সাধিত হওয়ার পাশাপাশি অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি অর্জন এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য ২০৩০ এর প্রতিশ্রুত স্লোগান ‘কেউ পিছিয়ে থাকবে না’ পূরণ হবে।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর মিরপুর সেনানিবাসস্থ বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস-এ অনুষ্ঠিত ‘হিউম্যান এমপাওয়ারম্যান্ট অ্যান্ড এটেইনিং সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস ইন বাংলাদেশ : দ্য কেইসেস অব উইমেন অ্যান্ড মার্জিনাল কমিউনিটি’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন।
ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে নব প্রজন্মের শিক্ষার্থীরাই পরিবর্তনের রূপকার। জনগণের জীবনমানের পরিবর্তন আনতে নতুন প্রজন্মকে তাদের সৃজনশীল মেধা ও জ্ঞানকে কজে লাগাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের বিস্ময়। সপ্তম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা ও এসডিজির লক্ষ্য বাস্তবায়নে সরকার নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
স্পিকার বলেন, নারীর ক্ষমতায়ন ও এসডিজি লক্ষ্য পূরণে বর্তমান সরকার জেন্ডার রেস্পন্সিভ বাজেট প্রণয়ন করছে। এছাড়া সংসদ সদস্যগণ নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নারী ক্ষমতায়ন ও দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন। নারী ও অতিদরিদ্র সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নয়নে খাতভিত্তিক পৃথক পৃথক বরাদ্দ রয়েছে বর্তমান বাজেটে। নারী উন্নয়নের ক্ষেত্রে মাতৃস্বাস্থ্য ও পুষ্টির বিষয়টি গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা, শিশুপুষ্টির কেন্দ্রই হলো গর্ভবতী মা।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নে ও খাদ্য নিরাপত্তায় নারীর অবদান ৭০ ভাগ। গৃহস্থলী কর্ম থেকে শুরু করে কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াকরণ ও বাজারজাতকরণে রয়েছে নারীর অসামান্য ভূমিকা। নারীর এ অবদানকে যথাযথ সম্মান দিলেই অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন সুরক্ষিত হবে।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের উপাচার্য মেজর জেনারেল মো. এমদাদ উল বারী ও উপ উপাচার্য এম আবুল কাসেম মজুমদার বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।