টপ অর্ডারে শুবমান গিল। এরপর পুরোনো বলের মাস্টারক্লাসে লোকেশ রাহুল ও মোহাম্মদ শামির উইকেট। ২০১৫ সালের ফাইনালে ২০ রানে স্টার্ক নিয়েছিলেন ২ উইকেট, এবার ৫৫ রান দিয়ে নিলেন ৩টি। অস্ট্রেলিয়ার বোলিং তোপে ধুঁকছে ভারত।
একদিনের ক্রিকেটে শ্রেষ্ঠত্বের শিরোপা ঘরে তোলার লড়াইয়ে মাঠে নেমেছে আসরের সেরা দুই দল। বিশ্বমঞ্চে এই মহারণে টানা দশ ম্যাচ জয়ের আত্মবিশ্বাস নিয়ে উড়তে থাকা ভারতের প্রতিপক্ষ পাঁচ বারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়া। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে আজ ভারতের হয়ে সূচনাটা ভালোই করেছিলেন ওপেনার এবং অধিনায়ক রোহিত। স্ট্রাইকার প্রান্ত থেকে তিনি চড়াও হতে শুরু করেছিলেন অজি বোলারদের উপর। ফলে দ্রুত রান উঠতে শুরু করেছিল ভারতের স্কোরবোর্ডে। তবে রান তলার এ ধারায় বাঁধা পড়ে গিল আউট হলে।
চতুর্থ ওভারে স্টার্কের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে অ্যাডাম জাম্পার মুঠোবন্দী হন গিল। ফলে ৭ বলে মাত্র ৪ রান করেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। এরপর ক্রিজে রোহিতের সঙ্গী হন বিরাট কোহলি। এ দুজন মিলে দ্রুতই সফল একটি জুটির দিকে এগোচ্ছিলেন। রোহিতের মারকুটে ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৩২ বলেই স্কোরবোর্ডে ওঠে ৪৬ রান। তবে এরপরই আবারো আঘাত হানে অস্ট্রেলিয়া।
দশম ওভারে ম্যাক্সওয়েলের বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ট্রাভিস হেডের ক্যাচে পরিণত হন রোহিত। ব্যক্তিগত অর্ধশতক থেকে ৩ রান দূরে থাকতেই সাজঘরে ফিরতে হয় তাকে। আউট হওয়ার আগে ৩১ বলে ৪ চার আর ৩ ছয়ে করেছেন ৪৭ রান। অধিনায়ক ফেরার ক্রিজে আসেন শ্রেয়াস আইয়্যার।
তবে সবশেষ দি ম্যাচেই শতক হাঁকানো আইয়্যারও আজ দলের হাল ধরতে পারেননি। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলেই তিনিও ফিরে যান কট বিহাইন্ড হয়ে। অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলে উইকেটরক্ষক জশ ইংলিশের গ্লাভসবন্দী হয়ে ৪ রান করেই প্যাভিলিয়নের পথ ধরতে হয় তাকে।
এরপর চতুর্থ উইকেটে ব্যাট করতে নামা লোকেশ রাহুলকে নিয়ে শুরুর ধাক্কা সামল দিয়ে এগোতে থাকেন কোহলি। ইনিংসের ২৬তম ওভারে নিজের অর্ধশতক পূরণ করে বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখতে থাকেন বিরাট। তবে অজি অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের বলে ব্যক্তিগত ৫৪ রান করে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফিরেন কোহলি।
পঞ্চম উইকেট জুটিতে রাহুলের সঙ্গে ৩০ রানে জুটি গড়ে দলের হাল ধরার চেষ্টা করেন অলরাউন্ডার জাদেজা। তবে জস হ্যাজেলউডের বলে ৩৬তম ওভারে জস ইংলিসের কাছে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
উইকেটে লম্বা সময় কাটালেও মন্থর ব্যাটিংয়ে ইনিংস বেশি বড় করতে পারলেন না লোকেশ রাহুল। মিচেল স্টার্কের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে তিনি ফিরলেন ১০৭ বলে ৬৬ রান করে।
৪২তম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিটি রাউন্ড দ্য উইকেট থেকে ব্যাক অব লেংথে করেন স্টার্ক। পিচ করার পর লাইন ধরে রেখে সোজা যাওয়া ডেলিভারি কিপারের গ্লাভসে পৌঁছানোর আগে ছুঁয়ে যায় রাহুলের ব্যাটের বাইরের কানায়। রাহুলের বিদায়ে আড়াইশর আগেই থেমে যাওয়ার শঙ্কায় ভারত।
আট নম্বরে নেমেছিলেন মোহাম্মদ শামি। শামি খেলতে গেলেন বড় শট। তবে স্টার্কের বিপক্ষে সেটি কার্যকরী হতে গেলে সবকিছুই পক্ষে আসতে হবে আপনার। কোনো কিছুই আসেনি শামির। বোলিংয়ে দুর্দান্ত শামি ব্যাটিংয়ে থামলেন ১০ বলে ৬ রান করে, রাহুলের মতো তিনিও ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটকিপার ইংলিসের হাতে। ফাইনালে ভারত হড়কে গেল আরেকটু। স্টার্ককে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত দারুণভাবে কাজে দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়ার।
হ্যাজলউড শর্ট বলে অস্বস্তিতে ফেলছিলেন সূর্যকুমারকে, পিচের ধীরগতি ভারত ব্যাটসম্যানের জীবন করে তুলেছিল আরও কঠিন। কুলদীপের সঙ্গে জুটিতে প্রথম ১৩ বলে তিনি খেলেছিলেন মাত্র ২টি বল, এবার দায়িত্বটা নিজের কাছে নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সফল হলেন না। শর্ট বলে আগেভাগে শট খেলে ফেলেছিলেন তিনি, বল গ্লাভসে লেগে উঠেছে ক্যাচ, যেটি সহজেই নিয়েছেন উইকেটকিপার ইংলিস। ভারতের বাকি ১ উইকেট, রান ২২৬, বল বাকি ১৫টি।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৪৮.১ ওভারে ভারতের সংগ্রহ ৯ উইকেটে ২২৭ রান।