একটি বাণিজ্যিক ট্যাংকার জাহাজে ইয়েমেন থেকে ক্রুজ মিসাইল হামলার ঘটনা ঘটেছে। কোনও হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও হামলায় ট্যাংকারটিতে আগুন ধরে যায়। হামলার শিকার এই ট্যাংকারটি নরওয়ের পতাকাবাহী বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১২ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়েছে, ইয়েমেনের হুথি-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে উৎক্ষেপণ করা একটি জাহাজ-বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র বাণিজ্যিক ট্যাংকার জাহাজে আঘাত হেনেছে। এতে জাহাজটিতে আগুন ধরে যায় ও ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কোনও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি বলে মার্কিন সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
এক মার্কিন কর্মকর্তা রয়টার্সকে বলেছেন, লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরকে সংযুক্তকারী বাব আল-মান্দেব প্রণালী থেকে প্রায় ৬০ নটিক্যাল মাইল (১১১ কিলোমিটার) উত্তরে স্ট্রিনডা নামের ওই ট্যাংকারে হামলার ঘটনা ঘটে।
দ্বিতীয় এক মার্কিন কর্মকর্তা বলেছেন, মিসাইল আক্রমণের শিকার হলেও হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই স্ট্রিনডা নিজেই সেখান থেকে চলে যেতে সক্ষম হয়।
মার্কিন সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকান বাহিনীর তত্ত্বাবধান করে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে পোস্ট করা এক বিবৃতিতে তারা বলেছে, ‘আক্রমণের সময় আশপাশে কোনও মার্কিন জাহাজ ছিল না, কিন্তু (মার্কিন নৌবাহিনীর ড্রেস্ট্রয়ার) ইউএসএস ম্যাসন এম/টি স্ট্রিনডার জরুরি কলে (মেডে কলে) সাড়া দেয় এবং বর্তমানে সেটিকে সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।’
রয়টার্স বলছে, হামলার শিকার রাসায়নিক এই ট্যাংকারটি নরওয়ের পতাকাবাহী। তবে হামলার পর জাহাজটির নরওয়েজিয়ান মালিক মউইনকেল কেমিক্যাল ট্যাংকার্স এবং ম্যানেজার হ্যানসা ট্যাংকার অফিসের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করা যায়নি।
টানা দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে গাজায় আগ্রাসন চালাচ্ছে ইসরায়েল এবং তাদের এই বর্বর হামলার মধ্যেই ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র হুথি গোষ্ঠী বেশ ভালোভাবেই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েছে। এমনকি দিন দুয়েক আগে ইসরায়েলগামী সব জাহাজে হামলার হুমকি দেয় গোষ্ঠীটি। তাদের এই হুঁশিয়ারি আঞ্চলিক সংঘাতের ঝুঁকিকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে।
এছাড়া হুথিরা লোহিত সাগর এবং ওই সাগরের বাব আল-মান্দেব প্রণালীতে ইসরায়েলি-সংযুক্ত বেশ কয়েকটি জাহাজ আক্রমণ চালানোর পাশাপশি জব্দও করেছে। এই সমুদ্রপথ দিয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ তেলবাহী জাহাজ যাতায়াত করে থাকে। এছাড়া হামাসের সঙ্গে সংঘাত শুরুর পর ইসরায়েলে ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র এবং সশস্ত্র ড্রোন নিক্ষেপও করেছে হুথিরা।
এমন অবস্থায় জাতীয়তা যেটাই হোক না কেন ইসরায়েলগামী সকল জাহাজকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হবে বলে গত শনিবার হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে ইয়েমেনের হুথি আন্দোলন। একইসঙ্গে ইসরায়েলি বন্দরগুলোতে যাওয়া ও সেখানে কর্মকাণ্ড পরিচালনার বিরুদ্ধে সমস্ত আন্তর্জাতিক শিপিং কোম্পানিকে সতর্কও করে দেয় গোষ্ঠীটি।
শিপট্র্যাকিং প্রাতষ্ঠান কেপলারের তথ্য অনুযায়ী, মিসাইল হামলার শিকার স্ট্রিনডা জাহাজটি মালয়েশিয়ায় উদ্ভিজ্জ তেল ও জৈব জ্বালানি লোড করে ইতালির ভেনিসের উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছিল। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে এই জাহাজটির কোনও সম্পর্ক আছে কিনা তা তাৎক্ষণিকভাবে পরিষ্কার হওয়া যায়নি।