জলদস্যুর কবল থেকে মুক্ত হওয়া জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ থেকে কার্গো খালাস চলছে। বাংলাদেশ সময় সোমবার (২২ এপ্রিল) রাত ৯টা ৩ মিনিটে সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হামরিয়াহ বন্দরের জেটিতে জাহাজটিকে ভেড়ানো হয়। এরপর রাত ১২টা থেকে কার্গো খালাস শুরু হয়।
এদিকে, বিমানযোগে বাংলাদেশে ফেরার ইচ্ছা পোষণ করেছিলেন জাহাজটির দুই নাবিক। তবে জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর পর সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন তারা। বর্তমানে ২৩ নাবিকই এমভি আবদুল্লাহর সঙ্গে বাংলাদেশে ফিরতে চান।
এ বিষয়ে মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) কেএসআরমের মালিকানাধীন এসআর শিপিংয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মেহেরুল করিম গণমাধ্যমকে বলেন, জাহাজ থেকে কয়লা খালাস চলছে। সংশ্লিষ্টরা এসে কয়লা যাচাই-বাছাই করে দেখেছেন। সব ঠিকঠাক আছে। আর জাহাজের দুই নাবিক আগে বিমানযোগে ফেরার সিদ্ধান্ত নিলেও তারা এখন সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছেন। এখন ২৩ নাবিকই জাহাজে করে ফিরবেন। বর্তমানে নাবিকরা সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।
গত ১২ মার্চ দুপুরে এসআর শিপিংয়ের জাহাজটি জিম্মি করে সোমালিয়ান দস্যুরা। সেখানে থাকা ২৩ নাবিককে একটি কেবিনে আটকে রাখা হয়। আটকের পর জাহাজটিকে সোমালিয়ার উপকূলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে জিম্মিকালীন সময়ে মালিকপক্ষের তৎপরতায় সমঝোতা হয় জলদস্যুদের সঙ্গে।
একপর্যায়ে ১৩ এপ্রিল বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ৩টা ৮ মিনিটের দিকে এমভি আবদুল্লাহ থেকে দস্যুরা নেমে যায়। এর আগে, একই দিন বিকেলে দস্যুরা তাদের দাবি অনুযায়ী মুক্তিপণ বুঝে নেয়। একটি বিশেষ উড়োজাহাজে মুক্তিপণ বাবদ তিন ব্যাগ ডলার এমভি আবদুল্লাহর পাশে সাগরে ছুড়ে ফেলা হয়। স্পিড বোট দিয়ে দস্যুরা ব্যাগ তিনটি কুড়িয়ে নেয়। দস্যুমুক্ত হয়ে শনিবার (২০ এপ্রিল) রাতে সোমালিয়ার উপকূল থেকে আরব আমিরাতের পথে রওনা দেয় এমভি আবদুল্লাহ।
গত ৪ মার্চ মোট ৫৮ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে আফ্রিকার মোজাম্বিকের মাপুতো বন্দর থেকে যাত্রা শুরু করে এমভি আবদুল্লাহ। ১৯ মার্চ জাহাজটির সংযুক্ত আরব আমিরাতের হামরিয়াহ বন্দরে পৌঁছানোর কথা ছিল।
কবির গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান এসআর শিপিংয়ের মালিকানাধীন ‘এমভি আবদুল্লাহ’ আগে ‘গোল্ডেন হক’ নামে পরিচিত ছিল। ২০১৬ সালে তৈরি বাল্ক কেরিয়ারটির দৈর্ঘ্য ১৮৯ দশমিক ৯৩ মিটার এবং প্রস্থ ৩২ দশমিক ২৬ মিটার। গত বছর জাহাজটি এসআর শিপিং কিনে নেয়। বিভিন্ন ধরনের পণ্য নিয়ে আন্তর্জাতিক রুটে চলাচলকারী এরকম মোট ২৩টি জাহাজ আছে কবির গ্রুপের বহরে।
২০১০ সালের ডিসেম্বরে আরব সাগরে সোমালি জলদস্যুদের কবলে পড়েছিল বাংলাদেশি জাহাজ জাহান মণি। ওই সময় জাহাজের ২৫ নাবিক এবং প্রধান প্রকৌশলীর স্ত্রীকে জিম্মি করা হয়। নানাভাবে চেষ্টার পর ১০০ দিনের চেষ্টায় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পান তারা।