দেশের লোকসানে থাকা চিনিকলগুলোকে আধুনিক করতে বাংলাদেশ চিনি ও খাদ্য শিল্প করপোরেশন (বিএসএফআইসি) ও এস আলম অ্যান্ড কম্পানির মধ্যে সমঝোতা স্মারক বাতিল করেছিল সরকার। গত ৪ জুলাই চিনি উৎপাদন বাড়াতে প্রকল্প বাস্তবায়নের আগে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য চুক্তিটি সই হয়।
শিল্প মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে গত ২২ আগস্ট এস আলমের সঙ্গে সই করা সমঝোতা স্মারক বাতিল করা হয়েছে। সম্ভব্যতা যাচাইয়ের এমওইউ করলেও চিনিকলগুলো মালিকানা অংশিদারিত্ব হাতবদলে কোনো চুক্তি হয়নি।তাই অতি সহজে মন্ত্রণালয় এমওইউ বাতিল করেছে।
বিএসএফআইসির অধীনে ১৫ চিনিকলের মধ্যে ৯টি চালু আছে। ক্রমাগত লোকসানে থাকা ৬টি চিনিকল ২০২০ সালের ডিসেম্বরে বন্ধ করে সরকার। তখন সরকার এই মিলগুলো আধুনিকীকরণ জরুরি হওয়ায় বন্ধ করেছে।
ওই সময় দ্রুত আধুনিকায়নের পরিকল্পনার কথা জানিয়ে ছিল। অনিদিষ্টকালের জন্য পাবনা, শ্যামপুর, পঞ্চগড়, সেতাবগঞ্জ, রংপুর ও কুষ্টিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোয় উৎপাদন বন্ধ ঘোষণা করে সরকার।
২০২০ সালের ডিসেম্বরে জাপান, থাইল্যান্ড ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রকল্পের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দিয়েছিল। প্রকল্পে বন্ধ ছয় কারখানা ও রপ্তানির উপজাতগুলো আপগ্রেড ও লাভজনক করা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে।থাইল্যান্ডের সুটেক ইঞ্জিনিয়ারিং কম্পানি, আরব আমিরাতের শারকারা ইন্টারন্যাশনাল ও জাপানের সোজিটজ মেশিনারি করপোরেশন যৌথ উদ্যোগে পাঁচ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগের পরিকল্পনা করেছে।
জাপান ব্যাংক ফর ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন ও এক্সিম ব্যাংক অব থাইল্যান্ড প্রকল্পটিতে অর্থায়নে আগ্রহী হওয়ায় ২০২২ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চূড়ান্ত অনুমোদন চাওয়া হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অনুমোদন না পাওয়ায় আর অগ্রগতি হয়নি।
জানা যায়, তখন সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি দেখা যায়। এর পরে এস আলম গ্রুপকে কারখানাগুলোর আধুনিকায়নের জন্য সমঝোতা স্মারক সইয়ের জন্য পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে রাজি করায়।চুক্তিতে প্রযুক্তি ব্যবহারে কৃষকদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আখ উৎপাদন বাড়ানোর কথা বলা হয়। পাশাপাশি আধুনিক আখ প্রক্রিয়াজাতকরণ প্ল্যান্ট, ছয় মেগাওয়াট এগ্রোভোলটাইক সোলার পাওয়ার প্ল্যান্ট, বাই প্রোডাক্ট প্রসেসিং প্ল্যান্ট ও প্যাকেজিং কারখানা করার পরিকল্পনা প্রস্তাব ছিল।
গত ৫ আগস্ট ক্ষমতা ছেড়ে শেখ হাসিনার ভারতে পালানোর পর এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান সাইফুল আলমের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ ওঠায় বিএসএফআইসি সতর্ক অবস্থানে যায়।