বর্ষীয়ান অভিনেতা তাপস পাল মারা গেছেন। মুম্বাইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মঙ্গলবার ভোররাতে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬১।
ফেব্রুয়ারির
শুরুতে মেয়ে সোহিনী পালের কাছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার কথা ছিল
তাঁর। সেই লক্ষ্যেই এয়ারপোর্টে বিমানে উঠার সময় হঠাৎ বুকে ব্যথা অনুভব
করেন।সেখান থেকে মুম্বাই বান্দ্রার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই তিনি ভেন্টিলেশনে ছিলেন তিনি ।
মাঝে চিকিত্সায় সামান্য সাড়া দিলেও সোমবার থেকে অবস্থার অবনতি শুরু হয়। মঙ্গলবার রাত ৩টা ৩৬ মিনিটে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
অভিনেতার
মৃত্যুতে শোকস্তদ্ধ গোটা শিল্পী মহল। শোকপ্রকাশ করে অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক
বলেন, ‘বড়ই অসময়ে চলে গেল। ও আমার ভাইয়ের মতো ছিল।’
পরিচালক
বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত, তাপস পাল তার সঙ্গে বেশ কয়েকটি ছবিতে কাজ করেছেন।
অসম্ভব উঁচুদরের অভিনেতা ছিলেন তিনি, তার তুল্য অভিনেতা বর্তমান টালিগঞ্জে
কার্যত নেই। তার যথার্থ মূল্যায়ন হয়নি।
পরিচালক
হরনাথ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ‘তাপস আমার বন্ধু ছিল। পারিবারিক সম্পর্ক ছিল
ওদের সঙ্গে। ওর বিয়েতেও গিয়েছি। খাওয়া-দাওয়া ওঠাবসা সবই ছিল। কি বলবো, ভাষা
হারিয়েছি। তবে ও খুব আনন্দ করে কাজ করতো। আমাদের সঙ্গে নেই ভাবতেই পারছি
না।’
অভিনেতা
চিরঞ্জিৎ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দাদার কীর্তি-তে তাপস পালের চরিত্রের অফার
এলে তিনি কখনও রাজি হবেন না, দাদার কীর্তি ও সাহেব-এ তার অভিনয় অতুলনীয়।
তাপসের শেষ জীবনটা অত্যন্ত খারাপ গেল, অত উজ্জ্বল ছেলের এই পরিণতি মানা যায়
না।
১৯৫৮
সালের ২৯ শে সেপ্টেম্বর হুগলির চন্দননগরে জন্ম। ছোটবেলা থেকেই অভিনয়ের
প্রতি আগ্রহ। কলেজে পড়াকালীন নজরে পড়েন পরিচালক তরুণ মজুমদারের। মাত্র ২২
বছর বয়সে মুক্তি পায় প্রথম ছবি দাদার কীর্তি। এরপর আর পিছনে ফিরে তাকাতে
হয়নি তাঁকে। একের পর এক হিট ছবি উপহার দিয়েছেন দর্শকদের। উল্লেখযোগ্য ছবি
গুলির মধ্যে ‘মায়া মমতা’, ‘সুরের ভুবনে’ ‘সমাপ্তি’ ‘চোখের আলো’, ’অন্তরঙ্গ’
সাহেব’ অনুরাগের ছোঁয়া, পারাবত প্রিয়া, ভালোবাসা ভালোবাসা। বাংলার মতো
বলিউডের ছবিতেও কাজ করছেন তাপস পাল। অবোধ ছবিতে মাধুরী দীক্ষিতের বিপরীতে
অভিনয় করেছেন তিনি। ‘সাহেব’ ছবির জন্য তিনি ফিল্ম ফেয়ার পুরস্কার পান।
কৃষ্ণনগর লোকসভা থেকে তৃণমূলের লোকসভার সাংসদ ছিলেন তিনি।